আবদুল্লাহ আল নোমান, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি: রাণীশংকৈলে ফিলিং স্টেশনগুলোতে প্রায় এক সপ্তাহ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না পেট্রল ও অকটেন। পেট্রোল ও অকটেন নির্ভর বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা বিপাকে পড়েছেন।
রবিবার (৮ মে) বেলা ১১টায় ফিলিং স্টেশনগুলোতে গিয়ে সরজমিনে দেখা যায়, জুই ফিলিং স্টেশন, আব্দুর রহিম ফিলিং স্টেশন, নেকমরদ হাইওয়ে ফিলিং স্টেশন, কাতিহার চেয়ারম্যান ফিলিং স্টেশনে পেট্রোল ও অকটেন সরবরাহের ট্যাংকগুলো পলিথিনে মোড়ানো রয়েছে। সেখানে লিখে দেওয়া হয়েছে পেট্রোল ও অকেটন শেষ। এভাবে প্রায় ৭ দিন ধরে পেট্রোল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে গতকাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না অকটেনও।
তবে পেট্রল পাম্প কর্তৃপক্ষ এবং খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ডিপো থেকে পেট্রল সরবরাহ বন্ধ থাকায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। কবে নাগাদ সমস্যার সমাধান হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। এতে পেট্রোলের তীব্র সংকটে বিকল্প হিসেবে অকটেন ব্যবহার করছিলেন আরোহীরা এখন এটাও প্রায় শেষ।
মোটরসাইকেল চালক শাহজামাল বলেন, পেট্রোল না পাওয়ার কারণে আমরা চরম দুর্ভোগে আছি৷ গতকাল শনিবার থেকে আবার অকটেন পাওয়া যাচ্ছে না। ইদের সময় আমরা যারা ছুটি নিয়ে বাসায় আসি আমাদের জন্য এটা অনেক কষ্টের। এবারে ইদে মোটামুটি রকম ছুটি বেশি পাওয়া গেছে৷ আমরা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুতিও নিয়েছি। কিন্তু শহরের কোথাও কোনো পাম্পে পেট্রোল ও অকটেন পাওয়া যাচ্ছে না৷ এটি কি আসলে পাম্প মালিকদের কোন ধরনের সিন্ডিকেট নাকি সরবরাহ নেই। তবে যাই হোক ডিপোতে এই বিষয়টি প্রশাসনের খতিয়ে দেখা দরকার বলে আমি মনে করছি। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধানও চাই।
আরেক মোটরসাইকেল চালক আব্দুর রহমান জানান, নেকমরদ বাজারে আসলাম একটি পাম্পে পেট্রোল ও অকটেন কোনটাই নেই আরেকটিতে শুধু অকটেন রয়েছে। সেখানে ৫০ টাকার বেশি দেয়না কোন রকমে বাড়ি যেতে পারবো এখন। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।
পেট্রোল সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে নেকমরদ হাইওয়ে ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার বলেন, ‘ডিপো থেকে কী কারণে পেট্রল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে তা আমার জানা নেই। পেট্রোল না দিতে পারায় আমাদের অনেক কাস্টমার ফিরে যাচ্ছে। নেই অকটেন ও। এ সমস্যা রাণীশংকৈল উপজেলার সব ফিলিং স্টেশনেই। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।’
নেকমরদ ভাই ভাই ফিলিং স্টেশন মালিক আব্দুল মতিন বলেন, প্রায় পাঁচ ছয়দিন থেকে আমরা কোন ধরনের পেট্রোল পাইনি৷ আমি পার্বতীপুর ও রংপুর সহ যে সকল ডিপো থেকে তেল আনি, সব জায়গায় যোগাযোগ করেছি৷ পার্বতীপুর থেকে বলছে আজকে ৪ টন পেট্রোল ও ৪ টন অকটেন দিবেন দিলে কোন রকমে ২ দিন চালাতে পারবো পরে আবার কি হবে সেটা আমরা জানিনা। অন্যান্য পাম্পগুলোতে তেল তো আগেই শেষ হয়ে গেছে। আমার কিছু ছিল তাই আমি এসবের মাঝেও ৫০ টাকা করে অকটেন সরবরাহ করে যাচ্ছি, যাতে করে মানুষকে মটরসাইকেল নিয়ে হেঁটে বাড়িতে না যে হয়। অন্যান্য পাম্প মালিকরাও বলছেন আজকে কিছু পেট্রোল ও অকটেন আসার কথা আসলে হয়তো কিছুটা ভোগান্তি কমবে।
এ নিয়ে পার্বতীপুর ডিপোর সাথে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার ইনচার্জ ফারুক হোসেন বলেন, ডিপোতে তেল না থাকার কারণে তারা ফিলিং স্টেশনগুলোতে সরবরাহ দিতে পারছেন না। তবে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি৷
ঠাকুরগাঁও পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনামুল হক জানান, শহরের কোন পেট্রোল পাম্পে পেট্রোল নেই। যে কয়েকটাতে ছিল সেগুলোও শেষ হয়ে গেছে। আমি বগুড়া, খুলনা ডিপোতে কথা বলেছি। তারা বলেছে তাদের কাছে আসলে তারা আমাদের পাঠাবে। আমরা যোগাযোগ অব্যহত রেখেছি। আশা করছি বিষয়টি নিরসন হবে৷
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আসলেই পেট্রোল সরবরাহ কম আছে। ডিপোগুলোতে একই অবস্থা। পার্বতীপুর ডিপোতে আমরা কথা বলেছি৷ সেখানেও সরবরাহ অনেক কম। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি স্বল্প সময়ের মধ্যে সমস্যাটি সমাধান হবে৷