বোরহান উদ্দিন, মহানগর প্রতিবেদক
গেলো দুইটি বছর করণার প্রকপের কারণে মানুষ অনেকটা ঘরবন্দী হয়ে ছিল। যার ফলে কেউ ঈদ উপলক্ষে কোথাও ঘুরতে বা বেড়াতে যেতে পারেনি।
এই বছর করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক থাকাতে মানুষ ঈদে ঘুরতে বের হতে পারছেন। প্রায় ১কোটির বেশি মানুষ রাজধানী ছেড়ে নিজ গ্রামে গিয়েছেন পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্যে।
কিন্তু যে সকল মানুষ শহরে রয়ে গিয়েছেন তারা ঈদের পরেরদিন বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে বের হয়েছেন। যেহেতু ঢাকার মধ্যে বড় পরিসরে ঘুরতে যাবার মত তেমন কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই বললেই চলে।
চিড়িয়াখানা শিশুপার্ক সহ খুব কম সংখ্যক কিছু বড় পরিসরের বিনোদন কেন্দ্র ঢাকাতে রয়েছে। তার মধ্যে শিশু পার্ক অনেক দিন যাবত বন্ধ রয়েছে। তাই সভাবতই রাজধানীবাসী মিরপুর চিড়ি়াখানায় পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়াতে এসেছেন।
জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ও ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. মজিবুর রহমান বলেন, আজ মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় এক লাখের বেশি মানুষের সমাগম ঘটেছে। ব্যাপকসংখ্যক মানুষ চিড়িয়াখানায় আসার কারণে আলাদা আলাদা পরিবারের শিশুসহ ৭০ জন তাঁদের সঙ্গীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় সবাইকে খুঁজে পাওয়া গেছে।
তিনি আরো বলেন, আজ এক লাখের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। ‘আজ চিড়িয়াখানায় স্মরণকালের রেকর্ডসংখ্যক মানুষ এসেছে। আমি নিজে চিড়িয়াখানায় আট বছর যাবত চাকরি করছি, একসাথে এত লোক কখনো দেখিনি। কোনো কোনো সময় প্রধান গেট খুলে দিয়ে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে। মনে হচ্ছিল গেট ভেঙে ফেলবে, এ রকম অবস্থা।’
জাতীয় চিড়িয়াখানায় টিকিট বিক্রি করেন ইজারাদার প্রতিষ্ঠান।
তারা চিড়িয়াখানার পরিচালককে এক লাখের বেশি টিকিট বিক্রির তথ্য জানালেও ঠিক কতসংখ্যক টিকিট বিক্রি হয়েছে, তা জানায়নি।
জাতীয় চিড়িয়াখানার সাবেক পরিচালক আবদুল লতিফ বলেন, ইজারাদার ব্যবসায়িক স্বার্থে টিকিট বিক্রির প্রকৃত তথ্য আমাদেরকে জানায় না। এটা তাদের ব্যবসায়িক একটি কৌশল।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
চিড়িয়াখানার ভেতরে যেমন মানুষ ছিল, তেমনি ছিল বাইরেও। দর্শনার্থীদের সূত্রে জানা যায়, ঈদের দিন অনেকের ব্যস্ততা থাকে। তাই সবাই বাইরে বের হতে পারে না। এতে কারণে ঈদের দ্বিতীয় দিন বেশি মানুষ বাইরে বের হয়।
ছয় বছরের ছেলেকে নিয়ে বিকেলের দিকে চিড়িয়াখানায় আসেন সুমন মোল্লা। তিনি বলেন, ‘সকাল বেলায় ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি। সকালে গেছিলাম জাদুঘরে। বিকেলে আসলাম চিড়িয়াখানা। এখানে এসে ছেলে আমার খুব খুশি। হরিণ দেখে সরতেই চাচ্ছিল না। ছেলে বলে, “আব্বা আমি এখান থেকে যাবনা, আমি এখানেই থাকমু।’
বিজ্ঞাপন
জাতীয় চিড়িয়াখানার সাবেক পরিচালক আবদুল লতিফ বলেন, রাজধানীতে চিড়িয়াখানার বিকল্প নেই। বাচ্চাকাচ্চারা পশুপাখি দেখতে চায়। বাঘ, সিংহ, হরিণ এসব বিদ্যালয়গামী ছেলেমেয়েরা বইয়ের পাতায় ছবি দেখে। তারা এগুলো বাস্তবে দেখতে চায়। চিড়িয়াখানার বাইরে ফ্যান্টাসি কিংডম রয়েছে, কিন্তু সেখানকার খরচ অনেক বেশি, সবাই বহন করতে পারে না।
চিড়িয়াখানায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন আবদুল লতিফ।