মোঃ সিরাজুল ইসলাম গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধিঃ ‘ হাসিনা আমাগো ঘর আর বাড়ি দিয়ে নতুন জীবন দিছে” চোখ ছলছল করে, এভাবেই কথা গুলো বলছিলেন রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবংগ্রাম ইউনিয়নের আদর্শগ্রামের বাসিন্দা রহমান শেখ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেবগ্রাম ইউনিয়ন ভবনের পাশেই সরকারি জায়গায় ছোট ৪ টিনের একটি ছাপড়ায় বসবাস করে আসছিলেন।
এই প্রতিবেদক যখন সেখানে পৌছান দেখা যায় যে, একজন মহিলা খুব যত্ন করে ঘরের রুমগুলো মুছছিলেন। এখনো সম্পুর্ন হয়নি মেরামতের কাজ। খুব তৃপ্তি নিয়ে বললেন জীবনে অনেক কষ্ট করছি। শীতের ঘরের বেড়া দিয়ে যখন বাতাস আসে সে কষ্ট তুমি বুঝবা না বাবা। আল্লাহ হাসিনারে বাঁচায় রাখুক হাজারো বছর। ভাবিনি কোন টেকা পয়সা ছাড়াই ঘর আর জায়গা দুটোই পামু। তার উপর আল্লাহর রহমত নাজিল হোক।
এই গ্রামের আরেক বাসিন্দা রিকসা চালক কাজল সেও একটা ঘর পেয়েছে। এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলার সময় দেখা গেলো সে এবং তার বৌ দুজনে মিলে ঘর ধোঁয়া মোছার কাজ করছে।সে বলে সারাজীবন রিক্সা চালিয়েও এমন বাড়ি করতে পারতাম। আল্লাহর রহমতে এখন সারাজীবনেন জন্য থাকার একটা ভরসা হলো। তানা হলে সারাজীবনতো রাস্তার পাশে থেকেই কাটাতে হবে ভেবেছিলাম। তারা দুহাত দুলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেন।কিন্তু সরকার আমাদের জন্য শুধু ঘর নয় সাথে দুই শতাংশ জমিও দিচ্ছে।
শুধু এরাই নন, তাদের মতো এমন ঘর ও জমি পাচ্ছেন উপজেলার মোট ৪৩০ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন হতদরিদ্র মানুষ। প্রত্যেকের নামে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে দুই শতক করে খাসজমি। প্রতিটি ঘর নির্মাণ বাবদ ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। যার পুরোটাই বহন করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।নির্মিত ১৯ দশমিক ৬ ফুট বাই ২২ ফুটের দুটি শয়নকক্ষ, একটি রান্না ঘর, সংযুক্ত পায়খানা- গোসলখানা ও সামনে বারান্দাসহ রঙিন টিনের ছাউনি দ্বারা এসব ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে গোয়লন্দ উপজেলায় ৭ কোটি ৩৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে এসব ঘরবাড়ি নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।মোট ৪৩০ টি ঘরের মধ্যে উপজেলার নদী ভাঙ্গন কবলিত দৌলতদিয়া ইউনিয়নে ১৭০টি এবং দেবগ্রাম ইউনিয়নে ১০০টি ঘর বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া উজানচর ইউনিয়নে ৮৭ টি এবং ছোটভাকলা ইউনিয়নে ৭৩টি ঘর নির্মিত হচ্ছে।এ সকল গৃহ নির্মাণ কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৩ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘর ও জমি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। এজন্য দ্রুত প্রত্যেকটি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরো জানান,এ উপজেলায় দ্বিতীয় ধাপে ‘খ’ শ্রেনীভুক্ত ৭১৩ টি পরিবারের ঘরের জন্য ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে আরেকটি প্রস্তাবনা জমা দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশর একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে সরকারের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রকৃত ভূমিহীন ও গ্রহহীনদের খাসজমি বন্দোবস্থ প্রদান পূর্বক তাদের জন্য পাকা গৃহ নির্মানের এই প্রকল্পেটি উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সময় মতো গৃহ নির্মান কাজ শেষ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অসাধারণ এই উদ্যোগ পৃথিবীর বুকে একটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।