মৃণাল চৌধুরী সৈকত,স্টাফ রির্পোটার: গত ২৭ মার্চ সোমবার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশীদের মধ্যে একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা টঙ্গীর ইমাম হোসেন রনি (৪০)। বিয়ের ৪৬ দিন পর সড়ক দুর্ঘটনায় রনির মৃত্যুর খবর পেয়ে পরিবারে আকাশ ভেঙে পড়েছে। পরিবার পরিজনের কান্নায় টঙ্গীর বড় দেওড়ার ফকির মার্কেট এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
জানা যায়, টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন বড় দেওড়াস্থ ফকির মার্কেট এলাকার বাসিন্দা ইমাম হোসেন রনি ও তার পরিবার। রনির বাবা আব্দুল লতিফের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরে হলেও টঙ্গীর ফকির মার্কেট এলাকার হোল্ডিং নম্বর ৯ এর জমি কিনে বাড়ি করেছেন তিনি। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে ইমাম হোসেন রনি দ্বিতীয় ছেলে আ: লতিফের।
রনির বোন সীমা আক্তার জানান, পাঁচ বছর হলো রনি সৌদি আরবে থাকেন। দুই মাসের ছুটিতে ফেব্রুয়ারী মাসের ৫ তারিখে দেশে আসেন ও ৭ তারিখে বিয়ে করেন। রনির প্রথম স্ত্রী ১ সন্তান রেখে তাকে তালাক দিয়ে চলে যান। রনির প্রথম পক্ষের একমাত্র ছেলে ইসমাইল হোসেন (১১) স্থানীয় একটি মাদরাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর রনির ছেলে ইসমাইল দাদা-দাদির সাথে থাকে। এ অবস্থায় ছুটিতে বাড়ি এসে শিমু আক্তারকে (২৫) বিয়ে করেন রনি। বিয়ের পর পরই হাতে মেহেদীর রং নিয়ে ওমরাহ পালনে যান রনি। সেখানে গত ২৭ মার্চ সোমবার এক সড়ক দূর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়। এদের মধ্যে ১৩ জন বাংলাদেশী এবং রনি টঙ্গীর বাসিন্দা।
ইমাম হোসেন রনির ভাই হোসেন আলী জসিম জানান, ২৫ মার্চ ওমরাহ পালনের জন্য ভাইকে বিমানবন্দরে দিয়ে আসি। ঠিক ঠাকমতো রনি গন্তব্যে পৌঁছে যায়। ওমরাহ পালন শেষে ১ এপ্রিল কাজে যোগদানের কথা ছিল তার। কিন্তু ২৭ তারিখ সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় সে মারা গেল।
রনির বোন হাজেরা বেগম জানান, আমার ভাইয়ের সঙ্গে শেষ কথা হয় সোমবার ইফতারের কিছুক্ষন আগে। ভাই বলেছিল, ওমরাহ শেষে কাজে যোগদান করবে। বাংলাদেশে ইফতারের সময় হয়ে গেছে বলে ফোন রেখে দেয় আমার ভাই রনি। তারপর মৃত্যুর সংবাদ পাই।
রনির বাবা আব্দুল লতিফ জানান, আমার ছেলেকে হারিয়ে আমি পাগল হয়ে গেছি।সরকারের কাছে আমার আবেদন, তাড়াতাড়ি যেন ছেলের লাশটা আমার কাছে পাঠায়।
ইমাম হোসেন রনির ছেলে ইসমাইল হোসেন বুঝে উঠতে পারছে না তার বাবা নেই। কেঁদে কেঁদে শুধু বলছে বাবা মারা গেছেন। শোকে স্তব্দ নববধু শিমু আক্তার।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ আলম জানান, লাশ আসার পর সরকারি নির্দেশনা অনুসারে সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।