হাসান মামুনঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অকল্পনীয় অবদান রেখেছেন। প্রতিবন্ধীদের সেবা ও সাহায্যের পরিধি বৃদ্ধি করতে প্রতিবন্ধী অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করারও পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রতিবন্ধীদের সমাজে মাথা উঁচু করে দাড়াতে এবং সকলের অবহেলা মুক্ত রাখতে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং এই কর্মকান্ড পরিচালনার স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘ তাকে বিশেষ মর্যাদা প্রদান করেছে। মন্ত্রী সোমবার বিকাল ৪ ঘটিকায় তার নির্বাচনী এলাকা পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া গ্রামে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় মাঠে প্রতিবন্ধী এবং স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষজনের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, কোন ভাবে কোন প্রতিবন্ধীকে অবজ্ঞা করা, ঘৃণা করা, নাক সিটকানো এটা কোন ভাবে উচিৎ না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধী শিশুদের গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। প্রতিবন্ধীদের সনাক্তকরার লক্ষ্যে জরিপ পরিচালনা করে প্রতিবন্ধীতার ধরণ অনুযায়ী সনাক্তকরন করা হয়েছে। সারাদেশে ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে এবং মোবাইল থেরাপী ভ্যানের মাধ্যমে সেবা প্রদান কার্যক্রম দেশের নিভৃত পল্লী পর্যন্ত পৌছে দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার প্রতিবন্ধী ভাতা চালু করেছেন। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভাতাও তিনি চালু করেছেন। মন্ত্রী বলেছেন, আমরা যদি একবার ভাবি আমার একটা সন্তান প্রতিবন্ধী হতো। আমার একটা ভাই প্রতিবন্ধী হতো। আমরা কি তাকে গলা টিপে হত্যা করতে পারতাম। কোন মা কি ফেলে দিতে পারতো! নিশ্চয়ই না। সে জন্য দরকার প্রতিবন্ধীদের প্রতি আমাদের ভালোবাসাকে উজার করে দেওয়া। স্বাভাবিক জীবনে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য যত বেশী সহানুভূতি জানানো হবে, যত বেশি অনুপ্রেরনা জানানো হবে, যত বেশী প্রশিক্ষিত করে তোলা যাবে তারা একটি জীবন পাবে। একবার চোখ বন্ধ করে হৃদয়ের চোখ দিয়ে একবার ভেবে দেখুন কত প্রতিকূল পরিস্থিতি প্রতিবন্ধী পরিবারকে বহন করতে হয়।
কলারদোয়ানিয়া প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শাহ মোহাম্মদ ইউনুস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার পূর্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় চত্ত¡রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ এর ঐতিহাসিক ভাষণের প্রতিচ্ছবি সম্বলিত ম্যূরাল উদ্বোধন করেন মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম। মন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের অবহেলা করা উচিৎ নয়। সহযোগিতা পেলে শিক্ষিত হলে এরা একসময় এ সমাজের যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেদের তৈরী করতে পারবে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। অনেকে প্রতিবন্ধীদের পরিবারের বা সমাজের বোঝা মনে করেন। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে প্রতিবন্ধীদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছেন এবং যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তার ফলে প্রতিবন্ধীরা বোঝার পরিবর্তে সম্পদ হয়ে উঠছেন।
এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাজিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু, কলারদোয়ানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাসনাত ডালিম, নাজমুল হুদা স্বপন, এ্যাডভোকেট আল-আমিন রেজভী, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল কান্তি বিশ্বাসর, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক তরিকুল ইসলাম চৌধুরী তাপস প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন, এসময় সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ইকবাল কবীর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডাঃ সঞ্জিব দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধ গৌতম চৌধুরী, শেখ মাটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান চৌধুরী নানু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্জন কান্তি বিশ্বাস, নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হুমায়ূন কবির সহ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।