রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবোর চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের আওতাধীন খালের অংশে পানি না থাকায় ধান আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। পানির জন্য অনেকে বোরো ধান বোপন করতে পারছে না আবার যারা বোপন করেছেন খালে পানি না থাকায় মৌসুমের শুরুতেই তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
সরজমিনে উপজেলার চন্ডীপুর, ইছাপুর, রাঘাবপুর, নুনিয়াপাড়া, নয়নপুর, নারায়নপুর, শ্রীরামপুরসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায় ৩০দিনের মধ্যে বীজতলা থেকে চারা নিয়ে বোপন করার কথা থাকলেও পানির অভাবে দেড়/দুই মাস অতিক্রম করায় অধিকাংশ বীজতলার মধ্যে নষ্ট হচ্ছে ধানের চারা। কৃষকরা পানির অভাবে জমিতে লাঙ্গল দিতে পারছে না আবার অনেকে বিকল্প উপায়ে পুকুর ও দীঘির পানি দিয়ে ধান বোপন করলেও আবাদি জমিগুলো পানি সংকটে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বোরো ধান গাছগুলো লালচে রং ধারণ করে প্রায় নষ্ট হতে চলছে। বোরো মৌসমে খালের পানির উপর ভরসা করেই কৃষকরা বোরো আবাদ করে কিন্ত সঠিক সময়ে পানি পেলে উৎপাদন ব্যাহত হবে। এতে দিশেহারা হয়ে কৃষকরা উপজেলা কৃষি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে পানি সংকট সমাধানের জন্য আবেদন করেছেন।
এ ব্যপারে নয়নপুরের কৃষক আবদুল কাদের বলেন, আমি এ বছর এনজিও সমিতি থেকে লোন নিয়ে পুকুরের পানি দিয়ে ৮০ শতাংশ জমিতে বোরো ধান রোপণ করি। কিন্তু খালে পানি সরবরাহ না থাকায় সব ধানগাছ প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে।নারায়নপুরের কৃষক কামাল, রাঘাবপুরের শ্যামল বলেন, ৪৫০ শতাংশ জমিতে ধারদেনা করে বোরো ধানের চাষ করেছি, কিন্তু পানির অভাবে ধানগাছগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কীভাবে দেনা পরিশোধ করব সে চিন্তায় আছি। নুনিয়াপাড়ার সিদ্দিক বলেন ২একর জমিতে চাষ দিয়ে রাখছি পানির অভাবে বোপন করতে না পারায় বীজতলায়ই নষ্ট হচ্ছে বীজ।
৪নং ইসাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমির হোসেন খান বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে আমি ইউএনও-র কাছে অভিযোগ দিয়েছি । তিনি এ সমস্যাটি সমাধানের ব্যাপারে চেষ্টা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রামগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সায়েদ রায়হানুল হায়দার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বছর এ প্রকল্পের অধীনে সাড়ে নয় হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ও ১৫শ হেক্টর জমিতে রবি শস্য আবাদ হবে। কিন্তু জানুয়ারির প্রথম দিকে পানি আসার কথা থাকলেও চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের মটর খারাপ থাকায় এবং কোন কোন স্থানে খালে বাঁধ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করায় পানি আসতে দেরি হচ্ছে। সঠিক সময়ে পানি না পেলে উৎপাদন ব্যাহত হবে। তাই চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি।আশা করি পানির সমস্যা সমাধান হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মিরা বলেন, এ ব্যপারে অভিযোগ পেয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে সরজমিনে পাঠিয়েছি এবং উপজেলা উন্নয়ন সভায় আলোচনা করেছি। পানি সংকট সমাধানের জন্য চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে আমাদের কৃষি কর্মকর্তাকে যোগাযোগ করার জন্য বলেছি। আশা করি অচিরে পানির ব্যবস্থা হয়ে যাবে।