সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লার দেবিদ্বারে ঘুষ না দেওয়ায় বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়াকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে খোদ বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড এর রাজস্ব উপ-শাখা দেবিদ্বারের কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোঃ গোলাম রায়হানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ১৭ ডিসেম্বর বাখরাবাদ গ্যাসের রাজস্ব উপ-শাখার দেবিদ্বরের কর্মকর্তার অফিসে। ২০ ডিসেম্বর বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের কর্মকর্তার এমন আচরনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন দেবিদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবে। এছাড়াও ভোক্তভোগী জোসনা বেগম গতকাল ১৯ ডিসেম্বর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড কুমিল্লার উপ-মহা ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাকের বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ অক্টেবর মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের জোসনা বেগম অবৈধ ভাবে চুলা ব্যবহারের অভিযোগে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন দেবিদ্বার গ্যাস অফিস কর্তৃপক্ষ। পরে জোসনা বেগম ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে পুনরায় সংযোগটি চালু করেন এবং জোসনা বেগম নিয়মিত বিলও পরিশোধ করে আসছেন। কিন্তু গত ১৭ ডিসেম্বর আরোবা সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন। পরের দিন ১৮ ডিসেম্বর জোসনা বেগম তার পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়াকে নিয়ে দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোঃ গোলাম রায়হানের নিকট যান এবং বৈধ গ্যাস সংযোগটি কেন অবৈধ দেখিয়ে বিচ্ছিন্ন করা হলো জানতে চাওয়া হয়। এসময় দাবী কৃত ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সংযোগ নিতে প্রকৌশলী গোলাম রায়হান তাদেরকে বলেন। এতে রাজী না হয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া কথা বলতে গেলে গোলাম রায়হান তার রাজস্ব কর্মকর্তা আনিছুর রহমানকে নির্দেশ দেন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাহির করে দিতে। ওই সময় দারোয়ান এসে বীরমুক্তিযোদ্ধাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অফিস থেকে বাহির করে দেন।
বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া বলেন, আমি অবসরপ্রাপ্ত একজন সেনা সদস্য ও বীরমুক্তিযোদ্ধা। আমার মেয়ে জোসনা বেগমের স্বামী একজন প্রবাসী, তার বাড়ির বৈধ গ্যাস সংযোগ অবৈধ দেখিয়ে বিচ্ছিন্ন করায় আমি কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে যাই। কিন্তু তিনি আমার কথা না শুনে দাবীকৃত টাকা পরিশোধ করে সংযোগ নিতে বলেন। আমরা এতে রাজী না হওয়ায় সে আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বাহির করে দিতে তার এক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলে দারোয়ান এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বাহির করেন দেয়। জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি এমন কিছুর জন্য নয়, আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জোসনা বেগম বলেন, গত ১৮ অক্টেবর আমার বাড়ির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পূনরায় চালু করতে আমার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চান কর্মকর্তা গোলাম রায়হান। সে সময় আমি বিপদে পড়ে দেবিদ্বারের গ্যাস কর্মকর্তা গোলাম রায়হানকে ৫০ হাজার টাকা দিলে লাইন চালু করে দেয়। লাইন দেওয়ার পর আমি নিয়মিত বিল পরিশোধ করে আসছি। কিন্তু গত ১৭ ডিসেম্বর আবারো আমার লাইন কেটে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। দাবীকৃত টাকা না দিতে চাইলে আমার আব্বাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বাহির করে দেয়।
অভিযুক্ত দেবিদ্বার গ্যাস কর্মকর্তা প্রকৌশলী গোলাম রায়হান এর মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয়) ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, আমরা দ্রæত তদন্ত করবো। তদন্তে প্রমানিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।