বাংলাদেশের কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স পদ্ধতির জটিলতা সহজ করা গেলে জাপানের বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি আগ্রহী হবেন বলে মনে করেন জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেটরো) কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই) এবং জেটরোর মধ্যে বিজনেস টু বিজনেস মিটিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ইউজি আন্দো বলেন, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ৪০টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি কোম্পানির সঙ্গে ভূমি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে স্থানীয় বাজারের জন্য পণ্য তৈরি করা হবে। চট্টগ্রামের ইপিজেডে প্রথম জাপানি বিনিয়োগে কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। জাপানের বিনিয়োগকারীরা সাপ্লাই চেইন ঠিক রেখে শিল্প স্থাপন করেন। তাই তারা চট্টগ্রামের মিরসরাই এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরকে কেন্দ্র করে রপ্তানিমুখী বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চান।
তিনি বলেন, জাপানি বিনিয়োগকারীরা আশা করেন যে, ২০২৫ সালের মধ্যে জাপান-বাংলাদেশ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (ইপিএ) সম্পন্ন হবে। এছাড়া কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রসিডিউরের জটিলতা সহজতর করা গেলে বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি আগ্রহী হবেন।
এসময় জেটরোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো চিটাগাং চেম্বারের নতুন নেতৃত্বকে অভিনন্দন জানান। এসময় বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে জাপানের বিভিন্ন বিনিয়োগ ও কোম্পানির বিনিয়োগের তথ্যচিত্র তুলে ধরেন তিনি। আগামী বছর জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ‘বে অব বেঙ্গল গ্রোথ সামিট’ আয়োজনে সহযোগিতার কথা জানান ইউজি আন্দো।
সভায় সিসিসিআই সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, জাপান বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। দেশের বর্তমান অবকাঠামো উন্নয়নে বড় বিনিয়োগ রয়েছে জাপানের। এর মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, ঢাকা মেট্রোরেল এবং শাহজালাল বিমান বন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল রয়েছে। জাপানের বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহায়তা করতে চিটাগাং চেম্বার জাপান ডেস্ক চালু করেছে। চিটাগাং চেম্বার আগামী বছর বে অব বেঙ্গল গ্রোথ সামিট আয়োজনের পরিকল্পনা নিচ্ছে। এছাড়া চিটাগাং চেম্বার থেকে একটি বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল জাপান সফর করতে চায়।
সিসিসিআই সভাপতি গত ৫১ বছর যাবৎ জাপানের চলমান উন্নয়ন সহযোগিতাকে আরও প্রসারিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে সেখানে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের অনুরোধ জানান। তারা যেন জাপানের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারে সেজন্য কারিগরি ইনস্টিটিউটগুলোর সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সেক্টরভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি তৈরির আহ্বান জানান তিনি।
এসময় মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনের লক্ষ্যে ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টরে যৌথ বিনিয়োগে শিল্প স্থাপনের জন্য চট্টগ্রামে জাপানি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান সিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাইসা মাহবুব। তিনি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের সহযোগী হিসেবে সব ধরনের সেবা দিতে চিটাগাং চেম্বার প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পর্যটন খাতে জাপানের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের প্রত্যাশা করেন সিসিসিআই পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ।
এদিকে, অটোমোবাইল সেক্টরে অর্জিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং (ওইএম) মোটর পার্টস উৎপাদনে জাপানের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান সিসিসিআই পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ।
দৈনিক নাগরিক ভাবনা’র অনলাইন পোর্টালটি শেখ রিফান আহমেদ-এর সম্পাদনায় পরিচালিত