মোঃ রুবেল খান, মোংলা বাগেরহাট: সুন্দরবনে বন কর্মকর্তা ও রক্ষীদের ওপর জেলেদের হামলার ঘটনায় ২১ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে বনবিভাগ। চাঁদপাই রেঞ্জের ষ্টেশন অফিসার ওবায়দুর রহমান বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে মোংলা থানায় হত্যার উদ্দেশ্যে ও সরকারী কাজে বাধা প্রধানসহ একাধিক ধারায় এ মামলা করেন। তবে এ মামলায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি বনবিভাগ। এর আগে বুধবার (২৯ মার্চ) সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় মাছ শিকার বন্ধে অভিযানের সময় জেলেদের হামলার শিকার হন দুই বন কর্মকর্তাসহ সাতজন।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের এসিএফ (সহকারি বন সংরক্ষক) মাহবুব হাসান জানান, ওই ঘটনায় মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি গ্রামের ২১ জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীরা হচ্ছেন- নয়ন খাঁ, শয়ন খাঁ, আমিরুল খাঁ, এনামুল খাঁ, লিটন খাঁ, আল মামুন শেখ, মারুফ খাঁ, তিতুমীর খাঁ ও মোঃ শহিদ, জাহাঙ্গীর খাঁ, রিয়াজুল খাঁ, জাকির শেখ, মোঃ সোহাগ, ইমরান শেখ, বাহারুল খাঁ, সুলতান শেখ, মিরাজ শেখ, মিলন শেখ, সোহেল খাঁ, সুমন শেখ ও মিরাজুল খাঁ। এছাড়া আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।
এসিএফ মাহবুব হাসান আরও জানান, বুধবার (২৯) বিকেলে সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর নদীর নন্দবালা, আন্ধারমানিক ও শ্যালা অভয়ারণ্যে (নিষিদ্ধ) এলাকায় মাছ শিকার করছিলেন একদল অসাধু জেলে। খবর পেয়ে এদিন তার নেতৃত্বে অভিযানে যায় চাঁদপাই রেঞ্জের বনরক্ষীরা। এসময় নিষিদ্ধ এলাকা থেকে জেলেদের চলে যেতে বললে তাদের ওপর চড়াও হন জেলেরা। এক পর্যায়ে নৌকায় থাকা বৈঠা ও দা দিয়ে বন কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করে তারা। এসময় আত্নরক্ষার্থে বনরক্ষীরা পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে জেলেরা পালিয়ে যায় বলে জানান তিনি।
তবে জেলেদের হামালায় চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মাহবুব হাসান, ষ্টেশন অফিসার খলিলুর রহমান, বোটম্যান শেখ মোতালেব, মোঃ তুহিন, সুলতান মাহমুদ মঞ্জু, সেলিম সরদার ও স্পিড বোট ড্রাইভার মঞ্জু রানা আহত হন। আহতরা সবাই রেঞ্জ কার্যালয়ে সেদিন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, নিষিদ্ধ এলাকায় জেলেদের মাছ শিকার বন্ধে বন রক্ষীদের সাথে নিয়ে কর্মকর্তারা অভিযানে গেলে তাদের ওপর সংঘবদ্ধ জেলেরা হামলা চালায়। এসময় বনরক্ষীরা আত্নরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে পালিয়ে যাওয়া জেলেদের ধরতে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু কাউকে আটক করা যায়নি। তবে কারা হামলা চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করা গেছে। এ ঘটনায় ২১ জনকে আসামী করে হত্যার উদ্দেশ্যে ও সরকারী কাজে বাধা প্রধানসহ একাধিক ধারায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলা দেওয়া হয়েছে। আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
ন/ভ