হাসান মামুনঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, ভাষা আন্দোলনে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের অন্যতম হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই প্রকৃত অর্থেই বঙ্গবন্ধু একজন ভাষাসৈনিক। ভাষা আন্দোলনে তার অবদান পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন সময়ের রিপোর্টে বিশেষভাবে উল্লেখ করা আছে। মন্ত্রী মঙ্গলবার বেলা ১১ ঘটিকায় পিরোজপুরের জেলা প্রশাসন আয়োজিত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক-সাঈফ মিজান স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি মুক্ত স্বাধীন প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে এসে ১২ জানুয়ারি মন্ত্রীসভা গঠন করেন এবং ১৩ জানুয়ারি মন্ত্রী সভার ১ম বৈঠকে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘‘আমার সোনার বাংলা-আমি তোমায় ভালবাসি’’ গানটিকে জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। একই সভায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘‘চল-চল-চল উর্ধ গগনে বাজে মাদল’’ গানটিকে রণসংগীত করা হয়। বঙ্গবন্ধুই প্রথম ১৯৭৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারি বঙ্গবন্ধু জেলে আটক থাকাবস্থায় অনশন করেন এবং সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা অমান্য করে মিছিল করার জন্য আন্দোলনে জড়িতদের অনুপ্রাণিত করেন। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি দেয় ইউনেষ্কো আর এর পিছনে ব্যাপক অবদান রাখেন সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবার পর থেকে পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রতিবছর জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে আমাদের এ প্রিয় মাতৃভাষাকে আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলে অনন্য উচ্চতায় পৌছে দিয়েছেন। বাংলাদেশের সর্বত্র বিশেষ করে সরকারি অফিসগুলোতে দাপ্তরিক কাজ বাংলায় সম্পন্ন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরনায় উচ্চ আদালতেও বাংলায় মামলার রায় লেখা হচ্ছে এবং কখনও কখনও ইংরেজিতে লিখলেও তা বাংলায় কনভার্ট হচ্ছে। সভা শেষে তিনি মহান ভাষা আন্দোলনে সরাসরি অংশ নেয়া পিরোজপুরের মৃত জালাল উদ্দিন এর পুত্র হেলাল উদ্দিনের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান পিপিএম সেবা, সিভিল সার্জন ডাঃ হাসনাত ইউসুফ জ্যাকি, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ আলী আজম, সিনিয়র সাংবাদিক গৌতম চৌধুরী, প্রেসক্লাব সভাপতি শফিউল হক মিঠু, পৌর কাউন্সিলর সাইদুল্লাহ লিটন, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি রাসেল পারভেজ রাজা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অনিরুজ্জামান অনিক, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য গোপাল বসু বক্তব্য রাখেন। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় ভাষণ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন সরকারি বালক বিদ্যালয়ের ছাত্র ধ্রæবজ্যোতি বিশ^াস, বালিকা বিদ্যালয়ের রুখাইসা রাসদা এবং দারুল কোরআন আলীম মাদ্রাসার ছাত্রী ফাতিমা আক্তারসহ বিভিন্ন সরকারি আধাসরকারি স্বায়তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।