পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েই মামলার বেড়াজালে খুলনার যুবলীগ নেতা বুলু বিশ্বাস!
সর্বশেষ পরিমার্জন:
রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪
১৫১
বার পঠিত
খুলনা ব্যুরো: খুলনা শেখবাড়ির আশীর্বাদ পুষ্ঠ সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের দাপুটে সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস ৫ আগস্ট সরকার পতন হয়ে যাওয়ার পর হাতেগোনা মাত্র কয়েকদিন আত্নগোপনে থেকে হাঠাৎ নিজের পিঠ বাঁচানোর স্বার্থে দল থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে জড়িয়ে পড়লো মামলার বেড়াজালে। আর তখন থেকেই বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে নেপথ্যের অজানা অনেক গোপন তথ্য জনসম্মুখে বেরিয়ে এসেছে লুকিয়ে থাকা থলের বিড়াল।
খুলনার রাজনৈতিক অঙ্গন সহ সর্বমহলের আলোচনার তুমুলঝড় এখন সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাসের রাজনিতির নৈতিকতা স্খলনের বিষয় নিয়ে। কারণ মাত্র তিন সপ্তাহ আগেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলের সবচেয়ে সুবিধা ভোগী শেখ পরিবারের একেবারে নিকটতম বিশ্বস্ত বেক্তিদের মধ্যে একজন।
বুলু বিশ্বাস খুলনা নগরীর নুন নগর এলাকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক মুসলিমলীগের অন্তর্গত সমর্থক বিশ্বাস পরিবারের সন্তান হওয়া সত্বেও আওয়ামী লীগ সরকার যখন সুবিধাজনক রমরমা অবস্থানে ঠিক তখন সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস নানান কৌশল অবলম্বন করে দলকে জনবল অর্থবল সহ দলীয় মিছিল মিটিংয়ে দাপটের সাথে শো ডাউন করেছে নিজ অনুসারী এলাকাগত যুব সমাজদের অর্থ প্রদানের মাধ্যমে নিজেকে সক্রিয় ভূমিকায় রেখে দলীয়গত ভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হলেও দলের এক অংশের একনিষ্ঠ নিবেদিত নেতাদের ছিল তার বিরুদ্ধে জুড়ালো অভিযোগ। খুলনার আওয়ামী যুবলীগের সূত্র থেকে জানা গেছে দলীয় তৃণমূল নেতাদের বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কটাক্ষ কুরুচিপূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়ে শেখ বাড়ি থেকে কোণঠাসা করে রাখার ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন পটু। ফলে বর্তমান দেশের রাজনৈতিকভাবে অন্যতম হট ফেবারেট জাতীয়তাবাদী দলের প্রথম সারির নেতারা অনেকেই মন্তব্য করেছেন এই ধরনের সুবিধা ভোগী নেতারা দলের ক্রান্তিলগ্নে নিজের পিঠ বাঁচানোর স্বার্থে অতি অল্প সময়ে ভোল পাল্টিয়ে অন্য দলে প্রবেশ করার চেষ্টা চালিয়ে সেখানেও যদি কোনোক্রমে প্লাটফর্ম মজবুত করতে পারে তবে এক্ষেত্রে ও মুদ্রার এপিঠ ওপিঠের দৃষ্টান্ত স্বরূপ নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য দুঃসময়ের নেতাদের সমস্যা সৃষ্টি করতে মোটেও কার্পণ্যতা করবে না সেহেতু এ ধরনের দুইমুখো নেতাদের দলে স্থান দেওয়া মানেই দলের মধ্য ঘরের শত্রু বিভীষণ ডেকে আনার শামিল হবে। কারণ খুলনা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সর্বমহল এর ব্যক্তিরা সকলেই বুলু বিশ্বাস সম্পর্কে কমবেশি অবগত আছে। সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস খুলনা আওয়ামী লীগের দাপুটে হাইব্রিড নেতা তিনি এখন ভোল পাল্টে নতুন সুর ধরেছেন এখন তিনি রাজনীতিতে অবসর নিচ্ছেন।সেই সঙ্গে রাতারাতি কোটা আন্দোলনের পক্ষেও কথা বলেছেন। অথচ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিনও তারা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের সম্পর্কে নানা প্রপাগান্ডা চালানো ছাড়া ও হামলা চালানোর মতো ঘটনার প্রকাশ্য অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্য অন্যতম হলেন নগরির সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস। অপরদিকে খুলনা শেখ বাড়ির আশীর্বাদপুষ্ট সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস ছিলেন শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল শেখ সোহেল উদ্দিন শেখ বাবুর খুব কাছের লোক। উল্লেখ্য গত বছর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারিবারিক সফরে খুলনা আসলে সেখানে অল্প কিছু আওয়ামী লীগ নেতা শেখ বাড়িতে প্রবেশ করতে পেরেছিলেন এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে ছবি তুলতে পেরেছিলেন। তাদের মধ্য অন্যতম ছিলেন সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস। তিনি শেখ পরিবারের একান্ত আস্থাভাজন। তাছাড়া তিনি ব্যক্তি স্বার্থে আগ্রাসন দখল করে বসেছিলেন খুলনার পানি উন্নয়ন বোর্ড গণপূর্ত সড়ক ও জনপদ সহ বড় বড় সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারী নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগ রয়েছে বুলু-বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। তিনি শেখ বাড়ির কোন না কোন ব্যক্তির কথা বলে টেন্ডার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন। যা খুলনা শহরের সকল ঠিকাদার জানলেও প্রতিবাদ করতে সাহস পেতেন না। যে টেন্ডারে তার উপস্থিতি ছিল সরব। এক কথায় তিনি টেন্ডার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন। তিনি দলও শেখ বাড়ি থেকে সকল ধরনের সুবিধা পেলেও হঠাৎ করে দল পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে নীতি ভ্রষ্ট হয়ে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দেন।এবং বিষয়টি বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের মাধ্যমে জানা যায় নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস একই সঙ্গে তিনি রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষোনাও দেন। এ সময় নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস বলেন আমার শারীরিক অবস্থা খারাপ আমি আর কোনদিন কোন রাজনীতিতে যাব না রাজনীতি এখানেই শেষ করলাম। এ সময় তিনি ঘটে যাওয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যাপারে দুঃখ করে বলেন যে অবস্থা দেখছি খুব খারাপ লাগছে আমার নিজের সন্তান থাকলে কি করতাম। কোটা আন্দোলনের বিরুদ্ধে কোনদিন আমি কোন অবস্থানে যায়নি যেতেও
চাইনা। এ বিষয়ে কি কোনোদিন আমাকে ছাত্র আন্দোলনের মাঠে ছাত্রদের বিরোধী অবস্থানে দেখেছেন প্রশ্ন করে তিনি বলেন আমি ছিলাম না আমি নৃশংসতা চাই না। আমি সাধারণ মানুষ হিসেবে বাঁচতে চাই। মানুষের সুখ-দুঃখে মানুষের পাশে থাকতে চাই এজন্য আমি পদত্যাগ করছি।