এলাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। প্রতিবাদ করলে তাকে মারপিটসহ এলাকা ছাড়া করেন ওই চেয়ারম্যান। এমন অভিযোগ তুলেছেন একাধিক ভুক্তভোগী।
স্থানীয়রা জানায়, অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যানের নাম আব্দুল হাই আকন্দ। তিনি গোহালিয়া বাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। তিনি ওই ইউনিয়নের মেম্বার ছিলেন। শুধু মাত্র বালু ব্যাবসাকে কেন্দ্র করে কালিহাতীর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার হাত ধরে নৌকার টিকিট পেয়ে চেয়ারম্যান পদ ভাগিয়ে নেন। জনপ্রিয়তা তলানিতে থাকলেও ইউনিয়নে রয়েছে তার ব্যাপক প্রভাব।
সেই প্রভাবকে কাজে খাটিয়ে যমুনা নদীর উৎসমুখে নিউ ধলেশ্বরী নদী হতে চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দ, হুমায়ুন কবীর সুমন, আজহার মিয়া, ওহাব আলী, আব্দুস সবুর ও আব্দুল লতিফ পরস্পরের যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে নদী হতে বালু উত্তোলন করে নদীতীরবর্তী শ্যামশৈল এলাকায় বিশালাকার স্তুপাকারে সংরক্ষনের জন্য জমা রাখেন।পরবর্তীতে ওই স্তুপকৃত বালু বেকু দিয়ে দিনেরাতে শতশত ট্রাক, ড্রাম ট্রাকে করে বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এতে করে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছেন।
স্থানীয়দের ধারনা শ্যামশৈল এলাকায় ৫০ লক্ষাধিক ঘনফুট বিটবালু গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দ ও তার সহযোগী বালু খেকোরা ইতোমধ্যেই বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ।
একটি সূত্র জানিয়েছে, আব্দুল হাই আকন্দ চেয়ারম্যান তার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের কতিপয় দূর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তা ও কর্মচারী স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং উপজেলা প্রশাসনের অধস্তন ব্যক্তিদের ম্যানেজ করেই তাদের অবৈধ বালু ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
দেশের বর্তমান অবস্থাকে পুজিঁকরে গত কয়েকদিন দিন যাবত শ্যামশৈল এলাকার স্তুপাকারে সংরক্ষিত বালু দিনরাত বেকু দিয়ে শতশত ড্রাম ট্রাকে অবাধে পরিবহন করে বিক্রি আসছেন তারা।
অভিযুক্ত গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দ বলেন,বেলটিয়ায় তার দুটি বালু মহল আছে একটি প্লাস্টারের মোটা বালু অন্যটি বিটবালু। তবে তিনি এলাকায় কোন প্রভাব খাটিয়ে বালু বিক্রি করেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, নদীর বালু পানি উন্নয়ন বোর্ড অথবা অন্য যেকোন ব্যক্তিই উত্তোলন করুকনাকেন তা সরকারি সম্পদ, নদীর উত্তোলিত বালু পরিমাপ করে নিলামে বিক্রি করা হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, এ বছর পাউবো টাঙ্গাইল কালিহাতীতে কোন খনন কাজ করেনি, তবে গতবছর পাউবো নারায়ণগঞ্জ ড্রেজিং বিভাগ ওই এলাকায় কিছু বালু উত্তোলন করেছিল, যা আমরা কালিহাতী উপজেলা প্রশাসনকে বুঝিয়ে দিয়েছি। তারা টেন্ডারের মাধ্যমে ওই বালু বিক্রি করার কথা।
কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) শাহাদাত হুসাইন বলেন, শ্যামশৈলের বালু সম্ভবত নিলামকৃত। ওই বালু নিলামকৃত নয় বলে নিশ্চিত করা হলে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে বলেন এবং বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করার পরামর্শ দেন। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করলে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।