শাহীন শহীদঃ বাস মালিক সমিতির দ্বন্দ্বে ১৫ বছর ধরে সরাসরি ভুরুঙ্গামারী-রংপুর বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুর্ভোগে কুড়িগ্রাম উত্তর নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী এই তিন উপজেলার জনগণ।জানা যায়, ১/১১ এর আগে সীমান্তবর্তী উপজেলা ভুরুঙ্গামারী থেকে কেবি ও আরকে সড়কে রংপুর পর্যন্ত প্রতিদিন ৫টি যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতো।তখন ভুরুঙ্গামারী থেকে ছেড়ে আসা এ বাসগুলোতে ফুলবাড়ী ও নাগেশ্বরীর মানুষ উঠে স্বাচ্ছন্দে রংপুরে যাতয়াত করতো। এরপর উত্তর ধরলা বাস, মিনিবাস ও মটর মালিক সমিতি ও কুড়িগ্রাম জেলা বাস মালিক সমিতির দ্বন্দ্বে তা বন্ধ হয়ে যায়। যা এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে।এদিকে সরাসরি বাস চলচল না করায় কয়েক ধাপে ভেঙে ভেঙে ভুরুঙ্গামারী থেকে রংপুর যাতাযাত করতে হচ্ছে। ফলে অপচয় হচ্ছে সময় ও অর্থের। যেন দুই মালিক সমিতির নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের যাত্রীরা।
নাগেশ্বরী বাসস্ট্যান্ডে রংপুরগামী মাইক্রোবাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা ফরহাদ হোসেন বাবু, আশরাফুল সহ কয়েকজন যাত্রী জানান, সরাসরি বাস সার্ভিস চালু না থাকায় সময় সাশ্রয়ে অনেকটা নিরুপায় হয়ে বেশি ভাড়ায় মাইক্রোতে যেতে হয়। জনপ্রতি ৩০০ টাকা ভাড়া নিলেও ১০ সিটের মাইক্রোবাসে ১৪/১৫ জন যাত্রী উঠিয়ে ঠাসাঠাসি করে নিয়ে যায়।
কোন কারণে এটি মিস করলে ভেঙে ভেঙে যেতে হয়। ভুরুঙ্গামারী- রংপুর মেইল বাস সার্ভিস চালু হলে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য সুবিধা হবে। কুড়িগ্রাম মটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর বকসী বলেন, উত্তর ধরলা মটর মালিক সমিতি অবৈধ ও বিতর্কিত। আমরা বারবার চেয়েছি যাত্রী সেবার মান উন্নয়নে তারা আমাদের সঙ্গে একীভুত হোক।
কিন্তু তারা তা না করে আমাদেরকে পাশ কাটিয়ে ভুরুঙ্গামারী-রংপুর বাস চলাচল শুরু করে। যা কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর সমিতির মালিকরা চায় না। ফলে সকলে মিলে সার্ভিসটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এভাবে বাস চলাচলের ক্ষেত্রে সময় নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। কারন আমরাও অনেক আগে থেকে কুড়িগ্রাম-রংপুর মেইল ও লোকাল বাস চালু করেছি।
উত্তর ধরলা বাস, মিনিবাস, মটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা বলেন, কোনভাবেই আমাদের সংগঠন অবৈধ নয়। এ নিয়ে বিতর্কের কোন সুযোগ নেই। দেশের অনেক জেলায় নিবন্ধিত একাধিক বাস মালিক সমিতি রয়েছে। আমরাও যথাযথ নিয়ম মেনে এর নিবন্ধন নিয়েছি। এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম মটর মালিক সমিতি হাইকোর্টে মামলা করে হেরে যায়।
তখন থেকে তারা আমাদের প্রতি বিরুপ আচরণ করে আসছে। লালমনিরহাট, রংপুর বাস মালিক সমিতি কোনভাবেই আমাদের বাস চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। মূলত কুড়িগ্রাম জেলা বাস মালিক সমিতি নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করে আমাদের বাসগুলো চলাচল বন্ধ করে দেয়। কোনভাবে গাড়ি চালাতে গেলে তারা সেগুলো ভাঙচুর করে। এ কারনে ভুরুঙ্গামারী-রংপুর সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ আছে। এ নিয়ে বহুবার তাদের সাথে বৈঠকে বসেও সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ জানান, আমি অল্প কিছুদিন হয় এ উপজেলায় এসেছি। এ বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। সকলের সাথে আলোচনা করে এ সার্ভিসটি চালু করা যায় কিনা চেষ্টা করে দেখবো।