সাইমুম রেজা পিয়াস: স্টামফোর্ড কলেজ উত্তরা। শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের অনিয়ম, লুটপাট আর দুর্নীতির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে উত্তরার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ নামে। প্রায় ৬ শ শিক্ষার্থীর এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে শিক্ষার জন্য আসা ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা। নামকরা প্রতিষ্ঠানটিতে অভিভাবকদের পকেট লুটের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘অধ্যক্ষ আরিফুল ইসলাম সুমন’।
পুরো পরিচালনা কমিটিই ভুয়া, জাল কাগজপত্র দেখিয়ে করা হয় স্ট্যামফোর্ড কলেজ উত্তরা’র নির্বাহী কমিটি। এসব অভিযোগ অধ্যক্ষ আরিফুল ইসলাম সুমন ও অবৈধ কমিটির সভাপতি কামাল বাশারের বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এক কোটি নয় লাখ টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। এগুলোর হিসেবে চাইলে বহিরাগতদের দিয়ে হুমকি দেয়া হয় মিজানুর রহমান ও খালেকুজ্জামানকে।
অভিযুক্ত কামাল বাশার ও অধ্যক্ষ আরিফুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা দাবি ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে আবেদন জমা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ফাতিনাজ ফিরোজ এবং মিজানুর রহমান যিনি ফাতিনাজ কর্তৃক কলেজ পরিচালনা বোর্ডের মনোনীত সভাপতি।
এক হলফনামায় ফাতিনাজ ফিরোজ বলেন, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অনুমতিক্রমে কলেজটি যাত্রা শুরু করে। কিন্তু করোনার কারণে আর্থিক সংকটে তিনি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে পারছিলেন না। পরে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে মিজানুর রহমান, খালেকুজ্জামান ও কামাল বাশারের নামে প্রতিষ্ঠানটি কিছু শর্তসাপেক্ষে হস্তান্তর করেন। কিন্তু মিজানুর রহমান ও খালেকুজ্জামানকে বাদ দিয়ে গোপনে কমিটি গঠন করেন কামালা বাশার। এতে অধ্যক্ষ আরিফুল ইসলাম সুমনের যোগসাজশ ছিলো বলে জানা যায়।
কামাল বাশার ও অধ্যক্ষ মিলেমিশে রেজুলেশনসহ কিছু কাগজ জালিয়াতি করে ফাতিনাজ ফিরোজের সঙ্গে প্রতিরণা ও জালিয়াতি করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া পাঠদানের মেয়াদ বৃদ্ধি ও কামাল বাশারকে কমিটির সভাপতিও করা হয় ভুয়া কাগজ দেখিয়ে। ঢাকা বোর্ড থেকে কমিটির অনুমোদনও নেওয়া হয়।
ভুয়া কাগজে তৈরি করা নির্বাহী কমিটি বাতিল দাবি করে গত ১৩ মার্চ ঢাকা বোর্ডে আবেদন জমা দেন ফাতিনাজ ফিরোজ।
এছাড়া গত ০৪/০৩/২০২৪ ইং তারিখে ফাতিনাজ ফিরোজ ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডাইরি (জিডি) নম্বর ৮০২।শামসুল আলমের বিরুদ্ধে। স্টামফোর্ড কলেজের চেয়ারম্যান কে না জানিয়ে তার বেশ কিছু স্বাক্ষর নিয়ে জালিয়াতি করেছেন এমন অভিযোগ করেন তিনি ।
আভিযোগ রয়েছে অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর ।এ নিয়ে গণধোলাই খেয়েছেন কয়েকবার। আরিফুল ইসলাম সুমন এক সময় উত্তরা লাইট হাউস ক্যারিয়ার কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন, ঐ সময় একজন শিক্ষিকাকে পুষলিয়ে নানা রকম অনিয়ম করেছিলেন সুমন এজন্য চাকরি ও চলে যায় তার।
নাম না বলা শর্তে ঐ শিক্ষিকা প্রতিবেদককে জানান, আমার জীবন টাকে নরকে পরিণত করেছে আরিফুল ইসলাম সুমন এখন লোকলজ্জা আমি কাউকে বলিনা।
২০১৩ সালের ১৭ মার্চ দক্ষিনখান বাজারে আরেকটি কোচিং সেন্টার ছিল সেখানে সাথী নামের এক ছাত্রীর সঙ্গে যৌন আচরণে মিলিত হলে স্থানীয়রা তা ধরে ফেলেন।
এ বিষয়ে সাথীর বাবা আনিসুল হক প্রতিবেদককে জানান, এটাতো অনেক আগের ঘটনা সুমন স্যারের কোচিংয়ে পড়তে গিয়েছিলেন আমার মেয়েকে উনি এমন কাজ করবেন তা জানা ছিল না। চরিত্রহীন এই শিক্ষকের কাছে ছাত্রী নয় তারা যেন রক্ষী ।
এ দুর্নীতির বিষয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার প্রতিবেদককে জানান, আগামী মঙ্গলবার কমিটি সরেজমিন তদন্তে যাবেন বলে জানান তিনি এবং বর্তমান কমিটি ভুয়া হলে তা অপসারণ করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান।
তবে এদিকে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড দুই সদস্যসের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বোর্ড। আগামী মঙ্গলবার কমিটি সরেজমিন তদন্তে যাবেন বলে জানা যায়।
বারবার চেষ্টা করেও মতামত জানা যায়নি অধ্যক্ষ ও সভাপতির।