রিপন মিয়া, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য নিজের প্রস্তুতকৃত ২৫ মণ ওজনের “লাল বাদশা”কে তোলা হবে কোরবানির হাটে। বিক্রির জন্য লাল বাদশার মূল্য রাখা হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। লাল বাদশার ন্যায্য মূল্য চান খামারী।
কোরবানি ঈদে বিভিন্ন জাতের গরু হাট বাজার এবার মাতাবে। কোনটি গানের নামে, কোনটি বনের হিংস্র প্রাণীর নামে, কোনটি আবার নায়ক বা ভিলেনের নামে নাম রাখা হয়েছে। বিশাল আকৃতির এবং আকাশচুম্বী এসব গরুর দর দাম শুরু হয়েছে খামার থেকেই। তবে গরুর ন্যায্য দাম নিয়ে দুঃচিন্তায় আছেন অনেক খামারী।
ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ বুড়াইল গ্রামের গোলাম মোস্তফা এবার ঈদে বিক্রির জন্য ২৫ মণ ওজনের একটি গরু প্রস্তুত করেছেন। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সকল ক্রেতার নজর কাড়বে গরুটি। খামারীর মালিক গোলাম মোস্তফা গরুটির নাম দিয়েছেন “লাল বাদশা”। তার দেয়া লাল বাদশা নামের বিশাল আকৃতির গরুটি দেখতে খামারে প্রতিদিন উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছেন। ক্রেতা এলে গোয়ালঘর থেকে ষাঁড়টি বের করতে বেশ কষ্টই হয় তাঁর। সাধারন মানুষের আশা গরুটি এবার ঈদ বাজারে ন্যায্য মূল্যে পাবে। ন্যায্য মূল্যে পেলেই অন্যান্য মানুষ গরু লালন-পালনে আরো আগ্রহী হবে।
খামারী গোলাম মোস্তফা বলেন, পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ৪ বছর থেকে গরুটি লালন-পালন করছি।
খামারি গোলাম মোস্তফা জানান, ‘লাল বাদশা’ বেশ শান্ত স্বভাবের। কাউকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে না।
গরুটিকে তিন বেলায় ১৪-১৫ কেজি স্বাভাবিক সুষম খাবার সবুজ খাস, পাশাপাশি নাশতা হিসেবে প্রাণিটিকে আপেল, কলা, কমলাসহ নানা ধরনের ফলমূল দিতে হয়। প্রতিদিন খাবারে জন্য লাল বাদশার পিছনে তার ব্যয় হয় ৭শ থেকে ৮শ টাকা। ন্যায্য মূল্য পেলেই গরুটি বিক্রি করবেন বলে তিনি জানান।
গোলাম মোস্তফার স্ত্রী মোছাঃ খাতিজা বেগম বলেন, চারটি বছর ধরে লাল বাদশাকে নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছি। মানুষ সন্তানকে যেমন আগলে রাখে, আমিও তেমনিভাবে রেখেছি। নিজের হাতে খাইয়েছি, গোসল করিয়েছি, যত্ন করেছি। এখন বিক্রি করে দিতে হবে ভেবে সন্তান হারানোর মতো কষ্ট পাচ্ছি।
ফুলছড়ি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার প্রান্তিক কৃষকরা কৃষিকাজের পাশাপাশি বাড়িতে দুই একটি করে গরু পালন করে আসছেন। অনেকে উন্নত জাতের গরু পালন করেন।
গোলাম মোস্তফার ষাঁড় পালনের বিষয়টি জানি। আশা করি, তিনি বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন। এগুলোর মধ্যে বড় আকারের বেশ কয়েকটি শাহী ওয়াল, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু এবারের কোরবানির পশুর হাটে উঠবে। অনলাইনে গরু বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে উপজেলার খামারিদের গরুর ছবি ও তথ্য আপলোড করা হচ্ছে।