1. smborhan.elite@gmail.com : Borhan Uddin : Borhan Uddin
  2. arroy2103777@gmail.com : Amrito Roy : Amrito Roy
  3. news.rifan@gmail.com : admin :
  4. holysiamsrabon@gmail.com : Siam Srabon : Siam Srabon
  5. mdr028999@gmail.com : Rayhan : Md Rayhan
সাত বৌ এর সাথে সংসার করা হলো না রবিজুলের, দুজনকে তালাক দিতে বাধ্য করলেন সমাজপতিরা - The NAGORIK VABNA
শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২৩ অপরাহ্ন
বিশেষ ঘোষণা
সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি/সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা শীঘ্রই নির্দেশনাবলী পড়ে আবেদন করুন অথবা 09602111973 বা 01915-708187 নাম্বারে যোগাযোগ করুন...
আজকের শিরোনাম :
সুজনের শার্শা উপজেলা কমিটি গঠন কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডের যানজট নিরসনে পেট্রোলপাম্পটি স্থানান্তর প্রয়োজন মাদারীপুরে দুর্নীতি ও হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে অভিনব প্রতিবাদ  মাদারীপুরে গ্রাম আদালত পরিচালনায় স্থানীয় অংশীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত  আমতলীতে এক দফা দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন বাঁশখালীতে গাঁজা ও নগদ টাকাসহ এক মহিলা আটক  শিক্ষাই মানুষের উন্নতির চাবিকাঠি এই চিন্তায় এগিয়ে চলছে মহেশপুরের গোপালপুর পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রাজনগর আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ২জন গ্রেপ্তার রাজশাহী-পুঠিয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে কিশোরীর মৃত্যু ছাত্র জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দুই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

সাত বৌ এর সাথে সংসার করা হলো না রবিজুলের, দুজনকে তালাক দিতে বাধ্য করলেন সমাজপতিরা

  • সর্বশেষ পরিমার্জন: রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪
  • ৪০ বার পঠিত

»»»»» »»»»»

উজ্জ্বল মাহমুদ, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় সাত স্ত্রীর সঙ্গে সুখে সংসার করা রবিজুলকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই তার সংসারে নেমে আসে সামাজ প্রধানদের চাপ। মাস চারেক আগে ৬ষ্ঠ স্ত্রীকে তালাক দিলে তিনি চলে গেছেন বাবার বাড়ি। এরপর ছয় স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানকে নিয়ে তার সংসার।

কিন্তু গ্রামের ২২ প্রধান একসঙ্গে হয়ে ইসলামী শরিয়ত মানাতে তাকে দুই স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ রাজিবুলের। এমনকি প্রধানরা বিচার ডেকে তাকে লাঞ্ছিত ও দুই স্ত্রীকে গ্রাম থেকে বের করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

শনিবার (৮ জুন) দুপুরে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের পাটিকাবাড়ি বাজারে ২২ গ্রাম প্রধানের উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গ্রাম প্রধানরা। রবিজুল ইসলাম (৪০) পাটিকাবাড়ি গ্রামের মিয়াপাড়ার আয়নাল মন্ডলের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের ২২ প্রধান এক হয়ে পাটিকাবাড়ি বাজারে সামাজিক বৈঠক ডাকেন। সেখানে রবিজুলকেও ডেকে আনেন তারা। বৈঠকে প্রধানের ভূমিকা পালন করেন স্থানীয় মাতবর নাজিম মন্ডল। এছাড়াও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফর উদ্দিন, লিটন মন্ডল, মাজিলা দারুস সুন্নাহ বহুমূখী মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মো. মুফতি আলমগীর হোসাইন, পাটিকাবাড়ী বায়তুল আমান জামে মসজিদের পেশ ঈমাম মো. মীর শফিকুল ইসলাম, পাটিকাবাড়ী হেফজখানা ও বহুমূখী মাদরাসার শিক্ষক মিজানুর রহমান, মাজিলা পশ্চিমপাড়া দারুলউলুম হাফিজীয়া ক্বারিয়ানা মাদরাসার মুহতামিম ক্বারী মশিউর রহমানসহ গ্রাম প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে শরিয়ত মোতাবেক চারের অধিক স্ত্রী রাখার বিধান না থাকার ইসলামী ব্যাখা দেন মুহতামিম হাফেজ মো. মুফতি আলমগীর হোসাইন। এ সময় রবিজুলের পঞ্চম ও সপ্তম স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।

রবিজুল ইসলাম বলেন, গ্রামের ২২ প্রধান নিজেরাই এক হয়ে সামাজিক বৈঠক ডেকে আমাকে উপস্থিত হতে বলেন। আমি তাদেরকে বলেছিলাম এইজন্য আমার সময় প্রয়োজন। কারণ আমি যাদের বিয়ে করেছি তারা সবাই গরিব ঘরের সন্তান। তাদের চলার মতো একটা অবস্থান তৈরি করে পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। কিন্তু তারা আমার কথা না মেনে তাদের নিজেদের মতো করে আমার দুই স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার জন্য জোর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেন। আমি তাদের তালাক দিতে চাই না। সালিশের পর তারা আমার দুই স্ত্রীকে গ্রাম থেকে বের করে দিয়েছেন। আমাকে এবং আমার মামাকে লাঞ্ছিত করেছে। আমি এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

তবে অভিযোগের বিষয়ে বৈঠকের প্রধান নাজিম মন্ডল বলেন, ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক চার স্ত্রীর বেশি রাখার বিধান নেই। সামাজিকভাবে বসে আমরা তাকে সেটাই বোঝাতে চেয়েছিলাম।

স্ত্রীদের তালাক দিতে আপনারা বাধ্য করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রবিজুল তার দুই স্ত্রীকে তালাক দিবেন বলে নিজেই অঙ্গীকার করেছেন। আমরা তাকে বাধ্য করিনি, তাকে মারধরও করিনি।

সামাজিক বৈঠকে উপস্থিত আরেক গ্রাম প্রধান পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সফর উদ্দিন বলেন, এটা অবৈধ বিয়ে। আমরা তাকে বাধ্য করিনি। তার দুই বউ মেনে নিয়েছে। তাদের কাবিন ও খোরপোশ বাবদ দুই লাখ টাকাও দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পাটিকাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রেজভি উজ্জামান বলেন, আমি বিভিন্ন মাধ্যমে সামাজিক বৈঠকের বিষয়টি জেনেছি। যেহেতু আমাকে প্রধানরা বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলেনি তাই আমি এ ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না।

তবে এ ব্যাপারে রবিজুলের দুই স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দরিদ্র পরিবারের সন্তান রাজিবুল মাত্র ১৩ বছর বয়সে বিয়ে করেন জেলার মিরপুর উপজেলার বালুচর গ্রামের কিশোরী রুবিনা খাতুনকে। বিয়ের দু’বছরের মাথায় এই দম্পতির এক পুত্র সন্তান হয়। পরে স্ত্রী ও সন্তানকে বাড়িতে রেখে লিবিয়ায় পাড়ি জমান রবিজুল। সেখানে টাইলসের কাজ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। পরে লিবিয়াতে পরিচয় হয় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার হেলেনা খাতুনের সঙ্গে। সেখানে তারা দুজন সম্পর্কে জড়ান এবং একপর্যায়ে তাদের বিয়ে হয়।

তাৎক্ষণিক প্রথম স্ত্রীকে বিষয়টি না জানালেও পরে জানার পর তিনি এ বিয়ে মেনে নেন। এরপর প্রথম স্ত্রী রুবিনাকেও লিবিয়া নিয়ে যান রবিজুল। সেখানে দুই স্ত্রী এবং সন্তান নিয়ে ১২ বছর বাস করেন তিনি। এরপর দেশে ফিরে বাবার ভিটায় দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেন।

এর কিছুদিন পরই মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের নুরুন্নাহারের সঙ্গে। পরে নুরুন্নাহারকে বিয়ে করেন রবিজুল। তবে নুরুন্নাহারের অভিযোগ, সম্পর্কের শুরুতে তিনি জানতেন রবিজুলের একজন স্ত্রী আছেন।

রবিজুলের দাবি, মায়ের মানত রক্ষায় ধারাবাহিকভাবে তিনি চতুর্থ বিয়ে করেন। তার চতুর্থ স্ত্রীর নাম স্বপ্না খাতুন। বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে। এরপর তিন মাসে পরপর তিনটি বিয়ে করেন রবিজুল। তার পঞ্চম স্ত্রীর নাম বানু খাতুন, বাড়ি আলমডাঙ্গা উপজেলার ডম্বলপুর গ্রামে। ষষ্ঠ স্ত্রীর নাম রিতা আক্তার। তার বাড়ি জেলার কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদাহ ইউনিয়নে। সর্বশেষ বিয়ে করা সপ্তম স্ত্রী মিতা খাতুনের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে।

দোতলা বাড়ির সাতটি কক্ষে বসবাস করেন স্ত্রীরা। প্রত্যেক স্ত্রীর শয়নকক্ষ আসবাবপত্র দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছেন একইভাবে।

রবিজুলের দাবি, বিধিসম্মত না হলেও তার স্ত্রীদের কারো কোনো অভিযোগ নেই। একসঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবেই তারা সংসার করছেন।

একাধিক বিয়ের ব্যাপারে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়ার উপপরিচালক মো. হেলাল উজ জামান বলেন, শরিয়াহ অনুযায়ী শর্ত সাপেক্ষে কোনো ব্যক্তি সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে করতে পারেন বৈধভাবে। এজন্য আগের সব স্ত্রীর অনুমতি থাকতে হবে। দাম্পত্য জীবনে সব স্ত্রীর সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এর বাইরে অতিরিক্ত কোনো স্ত্রী গ্রহণের বিধান নেই।

সামাজিক বৈঠকে জোরপূর্বক তালাক দিতে বাধ্য করা যায় কিনা সেই প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী বলেন, সামাজিক বৈঠকে চাপ দিয়ে কাউকে তালাক দিতে বাধ্য করানো আইনের চোখে অপরাধ।

 

ন/ভ

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আরও খবর...

আপনি কি লেখা পাঠাতে চান?