বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো: বৈষম্যবিরোধী ছত্র আন্দোলনের কাছে পড়াস্ত হয়ে অবশেষে বঙ্গভবন থেকে গোপনে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পলায়ন করল শেখ হাসিনা ফলে বাঁধভাঙ্গা উল্লাস উচ্ছ্বাসে মেতেছে বাংলার জনগণ শত শত শহীদের রক্তের প্রতিফলন ঘটেছে বাংলাদেশ। দেশজুড়ে সরকারের দেওয়া কারফিউ অপেক্ষা করে দ্বিতীয় দিনের মতন চলছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা সম্মিলিত এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারা দেশের সাথে খুলনায় ও অসহযোগ আন্দোলন। গতকালের ন্যায় সকাল ১১ টা থেকে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে জমায়েত হয়েছে লাখো ছাত্র-জনতা অভিভাবকসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।
তবে গতকাল অসহযোগ এর প্রথম দিনে দিন ভর খুলনা শহর উত্তাল রণাঙ্গন সাথে খুলনার সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন জুয়েল এমপির বাড়ি ভাঙচুর লুটপাট অপরদিকে অসংখ্য সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের মারধর করার অভিযোগ রয়েছে তার মধ্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল সুজন গুরুতর অবস্থায় খুলনা সিটি মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসারত রয়েছে। অপর দিকে দিকে খুলনা শহর তথা আশপাশ এলাকার সকল আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ভাঙচুর করা হয়েছে সাথে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে আন্দোলনরত সাধারণ জনগণ এবং পুলিশ প্রশাসন সহ শতাধিক লোক নিহত হলেও খুলনায় কেউ নিহত হয়নি।
তবে আজ এখন পর্যন্ত নগরের কোথাও কোন বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটেনি পুলিশের হামলার ঘটনা ঘটেনি পাশাপাশি সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত কারফিউ চলমান থাকলেও কারফিউ উপেক্ষা করে সাধারন জনগণ ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে ঘোরাফেরা করছে সাথে সেনাবাহিনী টহল দিলেও পরিবেশ শান্তিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে তবে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার যান চলাচল। বন্ধ রয়েছে নগরীর সকল মার্কেট শপিং মল দোকানপাট। খোলা রয়েছে জরুরি প্রয়োজনীয় কিছু প্রতিষ্ঠান অপরদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশক্রমে বন্ধ রয়েছে সরকারি সকল অফিস আদালত ব্যাংক সকল ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান অপরদিকে নগরীর যে সকল স্থানে ছাত্র ও সাধারণ জনতা আন্দোলন সফল করার লক্ষ্যে জমায়েত হয়েছে সেখানে গেলে মনে হয় না দেশে কারফিউ বলে কিছু আছে। খুলনা নগরের শিববাড়ি মোড়ে গেলে আন্দোলনরত লাখো লাখো জনস্রোত সীমাহীন সীমানা জুড়ে যতদূর চোখ যায় মানুষ আর মানুষ। কে শিক্ষার্থী, কে অভিভাবক,
কে পেশাজীবী চেনা বড় দায়। সবার গন্তব্য রক্ত দিয়ে কেনা বাংলার রাজপথে এক দফা এক দাবিতে দেশ জুড়ে চলছে দ্বিতীয় দিনের মতন অসহযোগ আন্দোলন। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সামিল হয়েছে আন্দোলনে। রাজপথে নেমে এসেছে শিশু থেকে ছোট বড় বয়সের সকলে।
আর এখানকার উপস্থিত সকলের দীপ্ত কন্ঠে স্লোগান আমার দেশের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালিয়ে বিনা কারণে আমার ভাই আমার সন্তানদের বুকে অমানবিক সীমারের মতন বুলেট ছুড়া হলো কেন। অকাতরে শত শত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবন দিতে হলো কেন। আমার দেশের ১৮ কোটি মানুষকে রাজাকার বলা হল কেন।
খুনি হাসিনা না জবাব দে। তাদের বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদে আরো বলেছেন আমাদের এখন আর অন্য কোন দফা নাই সারাদেশের ছাত্র জনতা সহ সকল শ্রেণী পেশাজীবী মানুষ একই কাতারে সামিল হয়ে সকলের এখন এক দফা এক দাবি সরকার সহ তার মন্ত্রিপরিষদ নিয়ে পদত্যাগ করে স্বাধীনতা যুদ্ধের আত্ম বলিদান ৩০ লক্ষ শহীদ ৩ লক্ষ বিড়াঙ্গনার সম্ভ্রম এবং চলমান আন্দোলনে যে সকল ছাত্ররা জীবন দিয়ে শহীদ হয়েছে তাদের আত্মাকে শান্তি দেন সাথে নিষ্পেষিত দেশের অসহায় মানুষদের আপনার জুলুম নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তি দেন। এ সময় ছাত্র জনতা সকলের এক হাতে প্লাকাট কন্ঠে আগুনঝরা স্লোগান এক দফা দাবিতে ৪ আগস্ট রোববার সকল ছয়টা থেকে চলছে অসহযোগ আন্দোলন এবং সমন্বয়কারীদের ডাকা অসহযোগ আন্দোলন সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত চলমান থাকবে কারণ এ আন্দোলন এখন ছাত্র আন্দোলনই সীমাবদ্ধ নয় এ আন্দোলন এখন জাতীয় আন্দোলনের রূপ নিয়েছে দেশের সকল সর্বসাধারণ মানুষেরা সকল ভেদাভেদ ভুলে একই কাতারে এসে সামিল হয়েছে। একই সাথে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিজিবি পুলিশ এবং দেশের জনগণের আস্হার সেনাবাহিনী ছাত্র জনতার পাশে থেকে ছাত্রদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার জন্য আশ্বাস দিয়ে বলেন আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করুন আপনাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা পাশে আছি। তা সত্ত্বেও বিহায়া সরকার বুঝছেনা জনগণসহ প্রশাসন তার পাশে নাই সে একা তার মন্ত্রী পরিষদের অনেক ভিআইপি ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এতো কিছুর পরেও সে নির্লজ্জকের মতন ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে ধরে বসে থাকতে চায় সে দেশের আর কত মানুষের রক্ত দেখে ক্ষান্ত হতে চায়। সে দেশে শান্তি চাইছেনা সে চাইছে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে কলঙ্কিত করতে কলঙ্কিত করতে চাইছে ৩০ কোটি শহীদের আত্মাকে।
তাই আজ আঠারো কোটি মানুষের প্রাণের এক দফা এক দাবি স্বৈরাচারিণী রক্ত পিপাসু শেখ হাসিনার পদত্যাগ।
আরও খবর...