বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো : অতি সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সারা দেশ তথা দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গৃহহারা অসংখ্য মানুষ আজও খোলা আকাশের নিচে অতি মানবেতর জীবন পার করছিলো তবে তার ক্ষত শুকাতে না শুকাতে গতকাল ১৯ জুন দুপুর ১২ টা নাগাদ হঠাৎ টর্নেডোর আঘাতে ফের তছনছ হয়েছে খুলনা বাগেরহাট জেলার বেশ কিছু অসহায় মানুষের আশ্রস্থান ভেঙেছে,বসত ভিটা উপরে পড়েছে, বৈদ্যুতিক খুঁটি উগলে পড়েছে অসংখ্য গাছ ছিড়েছে বিদ্যুতের তার ফলে বিদ্যুৎ বিহীন ওই সকল এলাকার মানুষেরা।
ভুক্তভোগীদের কথা সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও হালকা বাতাস হলে ও বেলা বাড়ার সাথে সাথে মধ্য দুপুরে শুরু হয় দমকা হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টি বাতাসের গতিবেগ ছিল আনুমানিক ৫৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার। ফলে ভেঙে পড়েছে অসংখ্য কাচা পাকা মধ্যম শ্রেণির বসতবাড়ি এতে জীবননাশের কোন খবর না থাকলেও ক্ষতি হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি গবাদি পশু গাছপালা সহ পুকুর ও মাছের ঘের ভেসে গেছে সাদা মাছ সহ চিংড়ি বাগদা ও হরিনা পাশাপাশি খোলা আকাশের নিচে ভেরি বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য গবাদি পশুর সাথে ক্ষতিগ্রস্ত আশ্রয়হীন মানুষেরাও তবে গতকাল টর্নেডোর আঘাতে উল্লেখিত এলাকার মানুষের ক্ষতি হলেও দেখতে আসেনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন মহলের কোন কর্তারা। এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়নি স্থানীয় ত্রাণ সহযোগী সংস্থা ফলে অনেকেই বিদ্যুৎ বিহীন ওষুধ বিহীন খাবার বিহীন অতি কষ্টের মানবেতর জীবন পার করছে।
তবে গতকালকের হঠাৎ টর্নেডোর তান্ডবের বিষয়ে খুলনার স্থানীয় ও বিভাগীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞ কর্তারা মন্তব্য করে বলেন বর্ষা ঋতু শুরু হয়েছে প্রায় মাস খানেক তবুও বৃষ্টির দেখা নাই খুলনা মোংলা উপকূলীয় অঞ্চলে। তবে আষাঢ়ের শুরুতে প্রচন্ড রোদ আর তীব্র তাপদহ দুর্বিষহ জীবন পার করছে জনজীবন। অথচ প্রকৃত ঋতু হিসাব করতে গেলে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ গ্রীষ্ম শেষ হয়ে বর্ষার মৌসুম আষাঢ়ের প্রথম ভাগ চলমান এ সময় থেকে আকাশে থাকবে ভাড়ি মেঘ গুরুম গারুম মেঘের ডাক বিদ্যুৎ চমকানি ঝিরিঝিরি বৃষ্টি সাথে মুষলধারাতো থাকবেই। অথচ দেশ জুড়ে মাঠঘাট শুকিয়ে বৃষ্টির পানির অভাবে ফেটে চৌচিড়। অথচ ঋতুর এই সময় বৃষ্টির পানিতে খাল-বিল থই থই করবে শাপলা ফুটবে এ সকল কিছুর দেখা নেই মানুষ বৃষ্টির প্রভাবে ঘর থেকে বের হতে সমস্যা বোধ মনে করবে অথচ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কালের বিবর্তে হচ্ছে আবহাওয়া পরিবর্তন। যা সারা বছর ধরেই আবহাওয়ার বিরূপ লীলাখেলার মাতম পরিলক্ষিত হচ্ছে। যার ফলে প্রকৃতির উপর বড় ধরনের বিপর্যয়ের বিরূপ প্রভাবের বড় ধরনের আশঙ্কা শংকিত প্রকৃতি। তবে গতকাল এবং আজ দুপুরের পর থেকে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ সাথে মুষলধারা বৃষ্টি মেঘের গর্জন ও বিদ্যুৎ চমকানির সাথে বজ্রপাতের সম্ভাবনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ঠিক এই সময় বৃষ্টির প্রয়োজনিয়তা অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কৃষকদের মাঠে থাকা ফসলাদির জন্য।
এদিকে খুলনা বিভাগের কৃষি ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্তারা বলেন প্রতিটি ঋতু যদি তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ধরে না রাখতে পেরে সময় মতন শীত গ্রীষ্ম বর্ষা যদি না হয় তাহলে সব ঋতুতেই ঋতু গত ফসলাদি প্রচন্ড ক্ষতি হবে ফলে কৃষি খাতে নেমে আসবে বড় ধরনের বিপর্যয়।
পাশাপাশি মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন যে সকল মৎস্য চাষীদের ঘের করতে গিয়ে পূর্বের অভিজ্ঞতা রয়েছেন তার উপর নির্ভর করে মৌসুমের বৃষ্টিকে লক্ষ্য রেখে পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা উচিত যাতে করে কষ্টার্জিত অর্থ অধিক জোয়ার অথবা বৃষ্টির পানিতে ভেসে সর্বনাশ না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে সর্ব ধরনের প্রস্তুত রাখা উচিত মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীদের।
তিনি আরো বলেন সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা রিমেলের আঘাত ও জলোচ্ছ্বাসে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মৎস্যচাষীদের প্রচন্ড ক্ষতি হয়েছে তার মধ্যে আবারও গতকাল থেকে শুরু হয়েছে মুষলধারা বৃষ্টি এতে করে যেমন ক্ষতি হচ্ছে মৎস্য ঘের মালিকদের তেমন আবার মরার উপর খরার ঘায়ায় ক্ষতি করছে যে সকল অসহায় মানুষেরা রিমেলের আঘাতে এখনো ঘরবাড়িতে ফিরতে পারেনি প্রস্তুত করতে পারেনি মাথা গোজার ঠাই এখনো রয়েছে খোলা আকাশের নিচে ভেরিবাদের উপর অথবা কোন আশ্রয় কেন্দ্রে সে সকল মানুষদের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি বরই দুর্বিষহ।