নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার আতলাশপুর এলাকার আব্দুস সামাদ ও তার বাহিনীর সদস্যরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এই বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষ । সামাদ বাহিনী এলাকার নিরীহদের হত্যাসহ হামলা, মিথ্যা মামলা ও অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছেন।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, আতলাশপুর এলাকার আব্দুস সামাদসহ তার বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই নিরীহ গ্রামের লোকজনের উপর হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এলাকা নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে নিরীহদের উপর হামলা ও মিথ্যা মামলা অব্যাহত রেখেছেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর বালু ভরাটের কাজ নিয়ে সামাদ বাহিনীর সঙ্গে ব্যবসায়ী সেলিম মোল্লা ও তার লোকজনের সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়।
ওই সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত না থাকলেও পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে পুর্ব শত্রুতা জেরে ব্যবসায়ী কাউছার আহাম্মেদ ভুইয়া ও তার পিতা আওলাদ হোসেন ভুইয়াসহ নিরীহ গ্রামের লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। শুধু তাই নয়, কাউছার আহাম্মেদ ভুইয়া ও তার পিতা আওলাদ হোসেন ভুইয়াসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে । এতে করে ফুসে উঠে এলাকার সাধারণ মানুষ। জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ১৯৯১ সালের ১৯ ডিসেম্বর আতলাশপুর এলাকার কলেজ ছাত্র মোবারক হোসেনকে নৌকা থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে চুবিয়ে হত্যা করে আব্দুস সামাদসহ তার বাহিনীর সদস্যরা। তখন নিরীহ হওয়ায় মামলা করতে দেয়নি প্রভাবশালী সামাদ বাহিনী। এছাড়া আতলাশপুর এলাকার যুবক আলী নুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। একই এলাকার মকবুল হোসেনের স্ত্রীকে শারিরিক নির্যাতন চালায়। সামাদ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। এলাকার প্রায় দশ মানুষ সামাদ বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আব্দুস সামাদসহ এ বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও নিরীহদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী । তানাহলে এলাকাবাসী আরো বড় ধরনের কর্মসুচী পালন করে বলে হুশিয়ারী দেন তারা ।
ইতি মধ্যে আতলাশপুর এলাকার নিরীহ ছাত্র মোবারক হোসেন হত্যাসহ নিরীহ গ্রামবাসীর উপর হামলা, মিথ্যা মামলা দায়ের ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে আব্দুস সামাদসহ তার বাহিনীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে স্থানীয় কয়েক শতাধীন নারী-পুরুষ মানববন্ধন কর্মসুচীও পালন করেছেন। ওই মানববন্ধনে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে সামাদ বাহিনীর কুশপত্তিকাদাহ করেন। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার হাটাবো-আতলাশপুর এলাকার কালাদি-রুপসী সড়কে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসুচী পালন করে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ।
ওই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন , রোবেল ভুইয়া, ফেরদৌস বাড়ী, কাউছার বাড়ী, হাফেজ আমিনুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, আযাহার ভুইয়া, কবির মোল্লা, বিল্লাল হোসেন মোল্লা, সোহরাব মোল্লা, আলামিন মোল্লা, আলী মিয়া, নুরে আলম ভুইয়া, মনির হোসেন ভুইয়া, কিরণ ভুইয়া, মিজান মিয়াসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এ বিষয়ে ব্যবসায়িক কাউসার আহমেদ ভূঁইয়া মুঠোফোনে বলেন, আমি আমার স্ত্রীর সন্তানকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। কিন্তু আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে সামাদ বাহিনী। এ জন্য আমি তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। এছাড়া সামাদ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নিরীহ গ্রামবাসী। তবে, এ ব্যপারে সামাদ বাহিনীর প্রধান আব্দুল সামাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি/তদন্ত) জুবায়ের হোসেন বলেন, আতলাশপুর এলাকায় বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় তাদেরকে কোন প্রকার হয়রানি করা হবেনা। এছাড়া সামাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ লিখিত ভাবে পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।