আজ মঙ্গলবার সকালে ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমদ শাহ কামাল হোসেন বলেন, সোমবার রাত ১০ টার দিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বাদী হয়ে থানায়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি উল্লেখ করেন- বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন কোম্পানিতে অনুপ্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয় ও বল প্রয়োগ করে অনৈতিক সুবিধা আদায় করছিলেন। আলটিমেটলি চাঁদা আদায় করেছে। পরে অভিযোগটি চাঁদাবাজির ধারায় রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। মামলায় একজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় ২০ জনকে আসামি করা হয়। তবে কোন আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়র কথা বলতে বহিস্কৃত নেতা ফখরুদ্দিন আহমেদের মুঠোফোনে মঙ্গলবার সকালে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেন নি।
মামলার বাদী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, মামলার মাধ্যমে সারা দেশে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। যত পুরাতন কিংবা ত্যাগী কর্মীই হোক না কেন যারা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে, ভাবমূর্তি নষ্ট করে অপকর্মে লিপ্ত থাকবে, দলের আদেশ নির্দেশ মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে দল জিরো টলারেন্স এ থাকবে। শুধু সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েই এখন আর বসে থাকবে না, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। কারণ কতিপয় ব্যক্তির জন্য এই ১৫ বছরে লক্ষ কোটি নেতাকর্মীর আত্মত্যাগ এগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। যার বিরুদ্ধে যে অভিযোগই উত্থাপিত হবে, সেটা যদি দলের কাছে প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই আনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা অপকর্মে জড়িত তারাদের সকলকে এসব থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভালুকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগ ওঠার পর ফখরুদ্দিন আহমেদ (বাচ্চু) নামের বিএনপির এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত রোববার রাতে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি-বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফখরুদ্দিন আহমেদ জেলা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভালুকা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এর আগে ওই এলাকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের লোকজনের নিয়ন্ত্রণ ছিল। সেখানে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ফখরুদ্দিন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভালুকা উপজেলার কাঠালী এলাকায় এলজি-বাটারফ্লাই মেনুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য চিঠিতে সুপারিশ করেন বিএনপি নেতা ফখরুদ্দিন আহমেদ। ২৭ আগস্ট দেওয়া চিঠিতে ওই প্রতিষ্ঠানের সাপ্লাই চেইন, পরিবহণ এবং ওয়েস্ট ডিজপোজাল কাজ ‘ভালুকা এন্টারপ্রাইজ’ কে চাপ তৈরি করেন। কাজ দেওয়ার আবেদনে ফখরুদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন কোম্পানীকে সুপারিশে লেখেন, ‘উল্লেখিত (ভালুকা এন্টারপ্রাইজ) প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ব্যবসা পরিচালনার কার্যাদেশ প্রদানের জন্য সুপারিশ করা হইল।’ এসব ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমলোচনার মুখে ওই নেতাকে বহিস্কার করা হয়।
বিএনপির ত্রাণ তহবিলে দেওয়া ফখরুদ্দিনের টাকা ফেরত : বন্যার্তদের জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রান তহবিলে জমা দেওয়া বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ফখরুদ্দিন আহমেদের ১০ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। সোমবার রাতে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি-বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় ত্রান কমিটির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম আজাদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ১ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভালুকা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক- ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়, যা বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ সংগ্রহ কমিটি অবহিত ছিলো না। এই পরিপ্রেক্ষিতে ত্রাণ তহবিলে তার দেয়া দশ লক্ষ টাকা অজ্ঞাতবশত: জমা নেয়া হয়। ত্রাণ সংগ্রহ কমিটি ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দল থেকে বহিস্কারের সংবাদ জানার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ সংগ্রহ তহবিলে জমাকৃত দশ লক্ষ টাকা ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে ফেরত দেয়া হয়েছে।