নরসিংদীর রায়পুরায় বাবা হাজী আইনুল হককে (৭০) দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে ইয়াসিনকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ। রোববার (৭ মে) সকালে উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মেজেরকান্দি উত্তরপাড়া গ্রামের ৩নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ইয়াসিন হাজী আইনুল হকের ২য় ছেলে।
নিহত আইনুলের পুত্রবধূ হাওয়া বেগম বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে ৪ বছর। আমার শ্বশুর ও সৎ শাশুড়ির অত্যাচারে আমি সব থেকে বেশি সময় বাপের বাড়িতে কাটিয়েছি। আমাদের বিষয় নিয়ে প্রায়ই আমার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া হতো। পরে আজ আমার স্বামী দা দিয়ে কুপিয়ে আমার শ্বশুরকে হত্যা করে।
অভিযুক্ত ইয়াসিন মাদকাসক্ত কি না, প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বিয়ের পর দেখতাম তিনি মাদক সেবন করতেন। কিন্তু আজ ১১ মাস ধরে তিনি কোনো মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত নেই। বিশ্বাস না হলে আপনারা তাকে টেস্ট করে দেখতে পারেন।
নিহতের বন্ধু হাজী কল্যাণ সংগঠনের মির্জানগর ইউনিয়নের সভাপতি হাজী আলম ভূইয়া বলেন, আইনুল হাজী কল্যাণের মির্জানগর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমরা ২০১৪ সালে এক সঙ্গে হজ করেছি। তারপর থেকে তার সঙ্গে আমার একটা সুসম্পর্ক। তিনি প্রায়ই এ নেশাগ্রস্ত ছেলেকে নিয়ে কথা বলতেন। তিনি তাকে খুব ভয়ও পেতেন। তার জন্য নরসিংদীতে একটি বাড়িও বিক্রি করতে হয়েছে বলে বলেছিলেন তিনি। আজ সকালে শুনতে পারি ইয়াসিন তার বাবা আইনুলকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এমন ছেলের উপযুক্ত শাস্তিস্বরূপ তার ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
মির্জানগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মোমেন মিয়া বলেন, খবর পেয়েই আমি ঘটনাস্থলে যাই। ইয়াসিন তার বাবাকে হত্যার পর সে নিজেই ৯৯৯ এ কল করে পুলিশকে তার বাবার মৃত্যুর খবরটি দেয়। পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দাসহ ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করে। আমরা এর উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক নবী হোসেন বলেন, দা দিয়ে কুপিয়ে বাবাকে হত্যার পর ছেলে ইয়াসিন নিজেই ৯৯৯ এ কল করে বিষয়টি জানান। পরে আমরা তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাই। এ ঘটনায় হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদের জন্য ইয়াসিনের স্ত্রী ও শাশুড়িকে থানায় নেওয়া হয়েছে। সুরতহাল প্রস্তুতকালে নিহতের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের চারটা জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।