জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকঃ
ঙ্গোপসাগরে ১৮ জেলেকে কুপিয়ে আহত ও ৯ জেলে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম থেকে চার জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহাবুব আলম বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
মঙ্গলবার রাতে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা, বড়ঘোনা, বাংলাবাজার ও শৈলকুপা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ জলদস্যুদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, কাইছার ওরফে কালু, মো. জাহিদ, মো. সেলিম। অন্য একজন কিশোর। বোট মালিক বাবার সঙ্গে বোটে থাকার কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ সময় কাইছারের কাছ থেকে বরগুনার বোট থেকে ডাকাতি করা একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া চারটি দেশীয় অস্ত্র, গোলাবারুদ, দুটি হাতুড়ি, তিনটি দা, একটি কিরিচ, দুটি শাবল ও জাল উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক বলেন, ’গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বরগুনার ১৮ জন জেলে মাছ ধরতে বঙ্গোপসাগরে রওনা দেন। ওই রাতে তারা পাথরঘাটা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পৌঁছান। ওই সময় ২৫-৩০ জনের একটি জলদস্যুবাহী দ্রুতগামী ট্রলার জেলেদের ট্রলারকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এই সময় আক্রমণকারীরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। জেলেদের ট্রলারে উঠে ১৮ জনকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করে। এ সময় জলদস্যুদের কবল থেকে বাঁচতে ৯ জেলে বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিখোঁজ হন। শেষে চারজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও পাঁচজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার করা চার জেলের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আর ট্রলারে থাকা বাকি ৯ জেলে অন্য একটি ট্রলারে করে শনিবার সন্ধ্যায় পাথরঘাটা পৌঁছে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে গুরুতর দুজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে, ডাকাতির সঙ্গে জড়িত একটি দল বাঁশখালী অবস্থান করছে। এরপর র্যাব-৭ অভিযান চালিয়ে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার মোবাইল ফোনটি দস্যুদের কবলে পড়া জেলে আবদুল করিমের বলে শনাক্ত করে র্যাব।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, জাহিদ ও কালু জেলেদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। সেলিম বোট মালিক। ডাকাতিতে তার বোট ব্যবহৃত হয়েছে। ডাকাত দল ১০ ফেব্রুয়ারি বোট নিয়ে সমুদ্রে যায়। প্রথমে কুতুবদিয়া চ্যানেলে একটি ডাকাতি করে। সেখান থেকে বরগুনার উদ্দেশে রওনা দেয়। পথিমধ্যে পটুয়াখালী চ্যানেলে দ্বিতীয় ডাকাতি করে। তাদের চক্রে ১৮-২০ জন আছে। প্রধান সহযোগীর ভূমিকায় অন্য একজন মাঝি আছেন।
সর্বশেষ ১৮ জেলেকে কুপিয়ে আহত করার সময় ওই বোট থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকার রসদ ডাকাতি করেছে বলে তারা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে।
র্যাব জানায়, দলটি আগে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি করত। এখন বরিশাল, বরগুনা এবং খুলনা অঞ্চলে ডাকাতি করে। সেখান থেকে ডাকাতির মালামাল নিয়ে কক্সবাজার বিক্রি করে।
Leave a Reply