উজ্জ্বল মাহমুদ কুষ্টিয়া :কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ছোট নদী ও বিল চাপাইগাছি ও কুমারনদীতে পানি কমা ও বাড়ার সাথে সাথেই নিষিদ্ধ চায়না বা দুই দুয়ারি জাল দিয়ে অবাধে চলছে দেশীয় মৎস্য শিকার। শুধু চায়না বা দুই দুয়ারি জাল নয় সাথে ব্যবহার করা হচ্ছে কারেন্ট জালও। এভাবে নদী, খালবিলে অবৈধ জাল দিয়ে মৎস্য শিকার করলে বিলুপ্ত হবে সকল প্রকার দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং জলজ প্রাণী।
বর্তমানে পানি বিলে স্বাভাবিক থাকায় নদী, বিলে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে অবাধে মৎস্য শিকার করলেও স্থানীয় প্রশাসনের কোন তদারকি নেই বললেই চলে।
সরেজমিনে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গজনবীপুর, খয়েরপুর, উজানগ্রাম, বাখইল এলাকার পাশদিয়ে বয়ে যাওয়া কুমার নদী ও চাঁপাগাছী বিল ঘুরে দেখা যায়, এলাকার মৎস্যজীবী লোকজন সন্ধ্যার পূর্বে নদী,বিলের বিভিন্ন জায়গায় দিনে এবং বিশেষ করে রাতে নদীর এপার থেকে ওপার পর্যন্ত এই চায়না বা দুই দুয়ারি জালসহ কারেন্ট জাল ফেলা হয়। এসব জালে শুধু ছোট, বড় মাছ নয় মাছের রেনু পোনা, ডিম বিভিন্ন জলজ প্রাণীও ধরা পড়ে। এতে নদীর দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এলাকার পল্লীচিকিৎসক নাসির উদ্দিন বলেন, জেলেরা সারা বছরই ছোট নদীতে গজনবীপুর এলাকায় দুয়ারি জাল ব্যবহার করে মৎস্য শিকার করে। এ জালে মাছ শিকারের ফলে মাছ, মাছের পোনা, মাছের ডিমও জলজপ্রাণীর ক্ষতি হয়। এতে এক সময় দেশীয় মাছ শূন্য হয়ে পড়বে নদী। চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছ শিকার বন্ধে প্রশাসনের অভিযানের দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, চায়না বা দুয়ারি জাল এবং কারেন্ট জাল ব্যবহার করে মৎস্য শিকার এটি একটি অপরাধ। এই জালের ব্যবহার মৎস্য সম্পদ, জলজ প্রাণী, জীব-বৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হয়। যারা এই অবৈধ জাল আমদানি করছে এবং বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। স্থানীয় জেলেদের সাথে কথা বললে তারা জানান, চায়না বা চায়না দুয়ারি জালেতে সব ধরনের মাছ ছেঁকে ওঠে। সহজেই মাছ ধরা যায় এবং দাম কম হওয়ায় বেশিরভাগ জেলে বর্তমানে এ জাল ব্যবহার করছেন। আমাদের জেলেদের মধ্যে যারা পুরোনো কৌশলে মাছ ধরতেন তাদের বর্তমানে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে চায়না দুয়ারি কিনছেন জীবিকা নির্বাহের জন্য।
উজানগ্রামে আকতার বলেন, বিকাল হতেই এই চায়না বা দুই দুয়ারি জাল নদীতে ফেলা হয়। সারা রাত নদীতে রাখার পর খুব ভোরে তুলে আনা হয় পাড়ে।
এ সময় জালে ধরা পড়ে দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় সব মাছ, নদীতে থাকা জলজ প্রাণী এমনকি ছেঁকে ওঠে মাছের ডিমও। এ জাল দিয়ে মাছ ধরলে কিছুদিন পর হয়তো নদীতে আর কোনো দেশীয় মাছ পাওয়াই কঠিন হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপির সদস্য আক্কাস বলেন, আমাদের সকলকে দেশীয় মাছ রক্ষার জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। নিষিদ্ধ চায়না জাল, কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে। তবে দেশীয় মাছ রক্ষা পাবে।
কুষ্টিয়া উপজেলা মৎস্য অফিসার বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দুইটি অভিযান পরিচালনা করেছি।তাদেরকে বলা হয়েছে মাছ না ধরার জন্য।এ বিষয়ে জেলা মৎস্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকার সুধী সাধারন মানুষ।
আরও খবর...