জেমস রহিম রানা: বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই কাঠফাটা রোদ আর দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই দেশের অধিকাংশ জেলায় ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। গতকাল সেটি ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। এসব এলাকায় গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। দিনের ছাতিফাটা গরমের পর ওইসব এলাকায় রাতেও নেই স্বস্তি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের ৮টি জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও বাকি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
গতকাল শনিবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকায় রেকর্ড করা হয়েছে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে দেশের চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ ও মৌলভিবাজার জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাবহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া যশোরে ৪২.০ মোংলায় ৪০৮, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৪০.৫, ফরিদপুরে ৪০.৩, কুমারখালীতে ৪০.০, খুলনায় ৩৯.৮, সাতক্ষীরায় ৩৯.৭, ঢাকায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ ছাড়া পরবর্তী তিন দিনে আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, কোনো এলাকায় তাপমাত্রা যখন ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাকে বলে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে সেটিকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। আর তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাহলে তাকে বলে তীব্র তাপপ্রবাহ।
উল্লেখ্য, ৯ বছর আগে ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিলে ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ছুঁয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, এবারের গরমে ভিন্নমাত্রা রয়েছে। বাতাসের আদ্রতা স্বাভাবিকের চেয়ে কম। তাই তাপাদাহের মধ্যে ঠোট শুকিয়ে ও ফেটে যাচ্ছে। বাতাসের জ্বলীয়বাস্প কম থাকায় মূলত এমন হচ্ছে। সকালে সুর্য উঠার সাথে-সাথে তীব্র রোদ। বেলা বাড়ার সাথে-সাথে এ রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে। বিশেষ করে দুপুরের পর আগুনঝরা রোদেও তেজে বাইরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে।