রিমন রাজভর গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নেসকো লিমিটেডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগে ব্যাপক অনিয়ম-হয়রানি-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ আলীর অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঘণ্টাব্যাপী উপজেলার রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের থানা চারমাথা মোড়ে ভুক্তভোগী গোবিন্দগঞ্জবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন আকন্দর সভাপতিত্বে ভুক্তভোগীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- তালুককানুপুর ইউপির মাহাবুবর রহমান ও পৌরসভার মতিউর রহমান প্রমুখ।
মাহাবুবর রহমান তার বক্তব্যে বলেন- বিগত ২০১৫ সালে নেসকোর সঞ্চালন লাইন থেকে প্রায় ১ কি. মি. দূরত্বে একটি সেচ সংযোগ (৭৪৭/বি) গ্রহন করি। অধিক দূরত্বে খোলা তারে ভোল্টেজ না পাওয়ায় পরের বছর সেচ সংযোগটি বন্ধ করে শ্যালো দিয়ে সেচ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আমার ওই সংযোগটি বন্ধে অফিসের তৎকালীন কর্মচারী ও কর্মকর্তারা বাতিলের আশ্বাস দিলে দীর্ঘদিন কোন বিল করা হয়নি। সম্প্রতি নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ আলী যোগদান করার পর ৩০ মার্চ’২৩ ৭৮৭৩ টাকার একটি বিল করা হয়। বিলটির বিষয়ে অফিসে যোগাযোগ করলে অসৎ কর্মচারী ছোট রাজ্জাক ও মেনারুল নির্বাহী প্রকৌশলীর কথা মত আমাকে নিয়মিত গ্রাহক দেখিয়ে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে হয়রানির পায়তারা করে। বিষয়টি আমি সাংবাদিকদের জানালে তারা আমার সাথে অফিসে গেলে তিনি আমাকে ও সাংবাদিকদের হুমকি দেন। আমি দ্রুত এই নির্বাহী প্রকৌশলীর অপসারণ সহ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হয়রানি বন্ধের আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
ভুক্তভোগী আ. মতিন আকন্দ জানান, আমি ২০২১ সালের জানুয়ারিতে আবাসিক সংযোগ ২৮১০৯/এ গ্রহণ করি। কিন্তু বোয়ালিয়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে নূরনবী মণ্ডলের ১৯৭৬ সালের ২৮১০/এ সংযোগে ডিসেম্বর’২২ তারিখে ১৭০২০ টাকা বকেয়া একটি বিল আমাকে দিয়ে দীর্ঘদিন হয়রানি ও বিদ্যুৎ মামলার ভয় দেখিয়ে আসছে। আমি নেসকোর গোবিন্দগঞ্জ অফিসের দুর্নীতিবাজ সকল কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের দ্রুত অপসারণ সহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি।
মানববন্ধন চলাকালে ফুলবাড়ী ইউপির ছোট সোহাগীর (১৮৬২৭/এ) নেসকোর গ্রাহক আব্দুর রাজ্জাকের পক্ষে একজন কাগজপত্র দেখিয়ে বলেন- বিগত ২০১৮ সালের ১৮ মে কর্তৃপক্ষ তার সংযোগের মিটারটি খুলে আনে; যা এখনও খোলাই রয়েছে। এর পর ডিসেম্বর ২০২১ সালে ৩৫৮৮৬ টাকা বকেয়া দেখিয়ে একটি বিল করে। যা পরবতীতে ৩৯০৫৬ টাকা দেখিয়ে আদায়ে হয়রানি করে আসছে।
মানববন্ধন চলাকালে একাত্বতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির আহবায়ক ও ওয়ার্কার্স পার্টির গোবিন্দগঞ্জ শাখার সভাপতি এম এ মতিন মোল্লা, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব হোসেন, বাসদের সভাপতি কমরেড রফিকুল ইসলাম, প্রেস ক্লাব গোবিন্দগঞ্জের সভাপতি প্রভাষক রফিকুল ইসলাম, রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি ডিপটি প্রধান, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাজাদুর রহমান সাজু। এসময় উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা নেসকো গোবিন্দগঞ্জ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ আলীর অপসারণ এবং তার ব্যক্তিগত পছন্দের নিয়োগকৃত দলীয় ক্যাডার সহ সকল অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় পকেট ভারী করা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে ভুক্তভোগীদের রেহাই দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। নেসকোর এহেন কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে আগামীতে বৃহত্তর কর্মসূচিরও ঘোষণা দেন তারা।