অনলাইন ডেস্ক: দমন-নিপীড়ন বন্ধ করে গণহত্যা ও নির্যাতনের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের আজকের দোয়া ও গণমিছিল কর্মসূচিতে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলায় হবিগঞ্জে একজন নিহত ও ঢাকার উত্তরা, সিলেট, হবিগঞ্জ, খুলনা, চাঁদপুর, লক্ষীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের বাধা, হামলা, গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ এবং দেশব্যাপী রেকর্ড সংখ্যক মিথ্যা মামলা, বিরোধীদলের নেতা-কর্মীসহ নিরীহ মানুষকে গ্রেফতারের’ অভিযোগ তুলে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফখরুল।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকারের সশস্ত্র হামলায় গণহত্যার শিকার নিহত ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় এবং হত্যাকারীদের বিচার ও আটককৃতদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ দোয়া ও গণমিছিলের কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ন্যক্কারজনক সশস্ত্র হামলা চালায়। হবিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলায় নিরীহ শ্রমিক মুশতাক মিয়া নিহত হন এবং অসংখ্য নিরীহ মানুষ আহত হন। সিলেটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে অসংখ্য মানুষকে আহত করে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দৈনিক কালবেলার সিলেট ব্যুরোর সংবাদ দাতা মিঠু দাস জয় গুলিবিদ্ধ হন। উত্তরায় পুলিশ এবং আওয়ামী ক্যাডাররা গুলি ছুড়ে আহত করেছে শিক্ষার্থীদের। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সেখানে নারী শিক্ষার্থীদের একটি বাসায় আটকে রাখে। নরসিংদীতে ছাত্রীদের মিছিলে মহিলা আওয়ামী লীগের উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা হামলা চালায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নির্মম, নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে সরকার ধিকৃত, ঘৃণিত হলেও জাতিসংঘসহ দেশ-বিদেশের কারও কথায় কর্ণপাত না করে হত্যা, নিষ্ঠুর হামলা, নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। শুধু হামলা নয়, আজকের কর্মসূচি বানচাল করতে ফেসবুক, টেলিগ্রামসহ সামাজিক গণমাধ্যমের বিভিন্ন সাইট বন্ধ করে দেয় সরকার। প্রাকৃতিক ও সরকারি প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে দেশব্যাপী লক্ষ-লক্ষ ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ জনসাধারণের সম্মিলিত স্বতঃস্ফূর্ত গণমিছিল প্রমাণ করে সমগ্র দেশ আজ রাষ্ট্রঘাতী-প্রাণঘাতী স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।
বিবৃতিতে তিনি হবিগঞ্জে নিহত মুশতাক মিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। পাশাপাশি হবিগঞ্জ, সিলেট, খুলনাসহ অন্যান্য স্থানে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব পেশাজীবী সংগঠন ‘মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ (এম-ট্যাব) সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন তুষার এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিনার হোসেনকে ডিবি পরিচয়ে তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটক রেখে নির্মম অত্যাচারের পর কারাগারে প্রেরণের অভিযোগ তুলে এর নিন্দা জানান। একই সঙ্গে অবিলম্বে এ ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করে আটককৃত নেতা-কর্মী ও ছাত্র-জনতার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে রেকর্ড সংখ্যক মিথ্যা মামলার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আইনজীবীরা মামলার কাগজ তুলতে গেলে তা না দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব মামলায় নিরীহ শিক্ষার্থী, জনসাধারণসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার ও গ্রেফতার বাণিজ্য করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে তা প্রত্যাহার, হয়রানি ও গ্রেফতার বাণিজ্য বন্ধ করারও দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
n/v