বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো: মুসলিম ধর্ম অনুসারী মানুষদের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযাহাকে কেন্দ্র করে গতকাল খুলনা নগরীর জোড়া গেটে প্রতিবছরের ন্যায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ও খুলনা জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ কমিশনারের সার্বিক সহযোগিতায় সিটি মেয়র আলহাজার তালুকদার আব্দুল খালেক গতকাল ১০ জুন সকাল ১১ টায় সপ্তাহ ব্যাপী কোরবানি পশুর হাটের উদ্বোধন করার মধ্য দিয়ে গবাদি পশুর হাটের পদযাত্রা শুরু হয়েছে ।
হাট উদ্বোধনের একদিন আগের থেকেই খুলনা জেলার আশপাশের অসংখ্য খামারি সহ গৃহস্থরা সারা বছর ধরে লালন পালন করে যে সকল পশু স্বাবলম্বী করেছে সেই সকল গবাদি পশু যা সারা বছরের পরিশ্রমের প্রতিফলন এবং সকল মায়া-মমতা ত্যাগ করে ভালো লাভের আশায় এখানে নিয়ে এসেছে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে।
তবে এবছর হাট শুরুতেই দেখা গেছে হৃষ্টপুষ্ট সুন্দর তরতাজা বেশ কিছু গরুর আমদানি সাথে হাম্বা সুরে মুখরিত হয়ে উঠেছে গবাদি পশুর হাট। তবে এখানে আগত বেশ কিছু খামারি মালিকরা গণমাধ্যমকে বলেছে আমরা সারা বছর খামারিরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোট অবস্থায় পশু গুলো সংগ্রহ করে বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ এর মাধ্যমে কোরবানীযোগ্য করে প্রস্তুত করেছি আশা করছি দাম ভালো পাবো তবে ভারতীয় গরু যদি না আসে সে ক্ষেত্রে আমাদের আশা পূরণ হবে। তবে গতকাল হাট উদ্বোধনের পর থেকে উপচে পড়া দর্শনার্থী ও সাধারণ মানুষের সমাগম থাকলেও ক্রেতা সংখ্যা তুলনামূলক খুবই কম। অপর দিকে জেলার বেশিরভাগ হাট গুলোতে গরু বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে মেপে প্রথম দিনেই তার প্রভাব পড়েছে নগরীর জোড়া গেট কোরবানি পশুর হাটে তবে অধিকাংশ গবাদিপশু বিক্রেতারা মন্তব্য করে বলেছেন অর্থনৈতিক মন্দা ও দ্রব্য মূল্য উর্ধ্বগতির কারণে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার বঞ্চিত থাকবে কোরবানি দেওয়া থেকে।
হাতেগোনা মাত্র ৬ দিন বাকি ঈদ উল আযাহা কোরবানী ঈদ অথচ গবাদি পশুর হাটে জনসমাগম থাকলেও নেই ক্রেতা সমাগম।খুলনা নগরীর জোড়াগেটের বিশাল কোরবানির পশুর হাটসহ আজ সকালে
জেলার আশপপাশের অঞ্চলের বেশ কিছু হাট সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে একই চিত্র। এক্ষেত্রে খামার মালিক গবাদি পশু বিক্রেতারা বলছেন গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানি যোগ্য গবাদি পশুর আমদানি অনেক বেশি থাকলেও ক্রেতাদের থেকেও দেখার মানুষের ভিড় বেশি। তারপরে আবার ভারত থেকে অবৈধ পথে ভারতীয় গরু আমদানির আভাস পেয়ে আমরা চিন্তিত। একেতো দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা মন্দা দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষেরা কোরবানী দিতে এবার হিমশিম খাচ্ছে। তবে আমরা খামারিরা দেশীয় গরু যে পরিমাণে পরিচর্যা করে প্রস্তুত করেছি তাতেই যথেষ্ট ছিল মোটামুটি ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হতে পারতো স্থানীয় খামার ব্যবসায়ীরা।
যদিও বর্তমানে ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম তবুও আমরা আশাবাদী এক দুই দিন আগ থেকে ঈদের দিন ভোর পর্যন্ত মোটামুটি ভালো বেচা বিক্রি হবে বলে আশা করা যায় এসব কথা নাগরিক ভাবনার প্রতিবেদক কে বলেছেন নগরের জোড়া গেট গরু হাটের গবাদি পশু বিক্রেতার মোখলেছ মিয়া।
তানার কাছে এবছর গরুর দাম তুলনামূলক একটু বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন গরু পরিচর্যা করতে তাদের পেছনে যে পরিমাণে সারা বছর আমাদের খরচ করতে হয় তা লাগামহীন।
কারণ সকল ধরনের গো খাদ্যর দাম আগের তুলনায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। খৈল, বিছলি, কাঁচা ঘাস, ছোলার ভূষি সহ আনুষঙ্গিক সকল পশু পালনের উপকরণ এর দাম একই হারে বেড়েছে সাথে আমাদের দিনরাত হাড় ভাঙা খাটনিতো রয়েছেই। এদিকে ডুমুরিয়া কাঁঠালতলা চুকনগর সাহাপুর বাগেরহাট সহ বিভিন্ন হাটের ক্রেতাদের ভাষ্য এবার অন্যান্য বছরে তুলনায় পশুর দাম ও অনেকটা বেশি সরকারিভাবে হাসিল ও বেশি তবে অধিকাংশ হাটে এবার লক্ষ্য করা গেছে স্কেলে মেপে বিক্রি করা হচ্ছে কেজি দরে যা একটু মধ্যম শ্রেণীর গরুগুলি ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা এবং ভাল মানের গরু ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি যা মেপে হিসাব করে কিনতে গেলে লাখের নিচে কোন ছোটখাটো গরুও মিলছে না। আর তার থেকে একটু ভালো জাতের তরতাজা তেজী গরু কিনতে গেলে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাজেট না করলে তার কাছেও ভিরা যাচ্ছেনা।
তবে এবছর প্রতিটি হাটে পশুর আমদানি দেখে সন্তুষ্ট ক্রেতাগণ ।