শাহীন শহীদঃ কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে বন্যা না হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে বরাদ্দ নেয়ার অভিযোগ উঠছে।জানা যায় , গত জুন ও জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে স্বল্প মেয়াদে দুদফা বন্যা হয় ভূরুঙ্গামারীতে। এতে উপজেলার পাইকডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আব্দুল করিম সপ্রাবি, শালজোড় সপ্রাবি, উত্তর ধলডাঙ্গা সপ্রাবি, পূর্ব ধলডাঙ্গা সপ্রাবি, ১নং চর ধাউরারকুটি সপ্রাবি, ২নং চর ধাউরারকুটি সপ্রাবি ও ভরতের ছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশের কারণে বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে বলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর থেকে জানানো হয়।কিন্তু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের তালিকা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তা দুই কর্মচারীর যোগ সাজসে বদলে যায়। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি না হলেও দক্ষিণ চর বাড়ুইটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে ২ লক্ষ টাকা, পশ্চিম বেলদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ লক্ষ টাকা, দক্ষিণ ভরতের ছড়া সপ্রা বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা, ২ নং পাইকেরছড়া সপ্রা বিদ্যালয়ে ১ লক্ষ টাকা ও চর- ভূরুঙ্গামারী সপ্রা বিদ্যালয়ের নামে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানান, শুধু বন্যা নয় যে কোন উন্নয়ন বরাদ্দ এলে কিছু তেলবাজ ও দালাল প্রধান শিক্ষকের দেওয়া তালিকা কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই আবেদন পাস করে বরাদ্দের ব্যবস্থা করে দেয় শিক্ষা অফিস । পরবর্তীতে ওই প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয় করে বরাদ্দকৃত অর্থ ভাগাভাগি করে নামকাওয়াস্তে কাজ করে সবাই মিলে সরকারি টাকা লোপাট করেন।শিক্ষকরা আরো জানান, যে কোন দূর্যোগের পর ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চাওয়া হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কর্মচারী মিলে প্রতি বারের মতো তাদের অনুগত শিক্ষকদের স্কুলের তালিকা পাঠান। বাস্তবে যেগুলোর অধিকাংশতেই কোনো ক্ষয়ক্ষতিই হয়নি।
বন্যা এলাকা থেকে পশ্চিম বেলদহ সরকারী বিদ্যালয়টি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে । সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক এই প্রতিবেদককে জানায়, আমাদের বিদ্যালয়টি উঁচু এলাকায়। এখানে কোন বন্যা হয়নি। ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। অথচ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে ১ লক্ষ টাকার বরাদ্দ নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।এ বিষয়ে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফায়েল হোসেন জানান, বন্যার পানিতে স্কুলের টয়লেটের টাংকি নষ্ট হয়েছে।
সরেজমিনে দক্ষিণ চর বাড়ুইটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষককের দেখা মেলেনি। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন না খুঁজে পাওয়ার পর এলাকাবাসী জানান , পানি বিদ্যালয়ের মাঠে উঠেছিল কিন্তু ক্ষয়-ক্ষতির মতো বন্যা হয়নি। পুরাতন টিনশেডের ঘরের মেঝে আগে থেকেই ভাঙ্গা ছিল।সেটিকেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে অফিসের যোগসাজসে বিদ্যালয়ের নামে ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ এনেছেন প্রধান শিক্ষক। অথচ এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা এবিষয়ে কিছুই জানেন না। এর আগেও ক্ষুদ্র মেরামতের, স্লিপের টাকা বরাদ্দ নিলেও কোন মেরমতের কাজ করতে দেখা যায় নাই।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন জানান, বন্যার পানি বিদ্যালয়ে ঢুকেছিল মৌখিকভাবে অফিসকে জানিয়েছি। বরাদ্দ আসার ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অফফিসার আখতারুল ইসলাম বলেন আমি তিন দিনের প্রশিক্ষণে ঢাকায় আছি, এটিওদের সাথে কথা বলে অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্হা নেয়া হবে।।