আমতলী বিএনপি’র দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, আওয়ামীলীগের ৪৪৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
সর্বশেষ পরিমার্জন:
শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪
২০৯
বার পঠিত
»»»»» »»»»»
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক মেয়র মতিয়ার রহমানকে প্রধান আসামী করে সাত ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো ৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ৪৪৩ জনের বিরুদ্ধে একই ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলা ছাত্রদল আহবায়ক সোয়েব ইসলাম হেলাল ৫৫ জন এবং পৌর যুবদল সভাপতি জাকির হাওালাদার ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে বিএনপি’র দলীয় কার্যালয় ভাংচুর ঘটনায় এ মামলা করা হয়।
মামলা বিবরন সুত্রে জানাগেছে, গত ৫ আগষ্ট দুপুর পৌনে একটার দিকে আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জিএম ওসমানী হাসানের নেতৃত্বে সাড়ে চার শতাধিক আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকর্মী আমতলী উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর চালায়। এ সময় তারা (আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা) অফিসের আসবাবপত্র তছনছ করে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে আমতলী উপজেলা ছাত্রদল আহবায়ক সোয়েব ইসলাম হেলাল ৫৫ জন এবং জাকির হাওলাদার ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে বাদী হয়ে একই ঘটনায় আলাদা আলাদা দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক জিএম ওসমানী হাসান, সাবেক উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র নাজমুল আহসান নান্নু, সাবেক উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন, গুলিশাখালী ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. নুরুল ইসলাম, গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনি, আঠারোগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম রিপন, কুকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বোরহান উদ্দিন মাসুম তালুকদার, হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক, চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খাঁন, আমতলী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা, আড়পাঙ্গাশিয়া ইউপি একমাত্র নারী চেয়ারম্যান সোহেলী পারভীন মালা ও আঠারোগাছিয়া যুবলীগ নেতা সোহেল রানা, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৯৩ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং ৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ৪৪৩ জনকে আসামী করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে উপজেলা বিএনপি’র দলীয় কার্যালয় ভাংচুরের সঙ্গে জড়িত নয় এমন ইউপি চেয়ারম্যান ও নিরহ মানুষকে হয়রানী করতে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
মামলার আসামী সোহেল রানা বলেন, বিএনপি অফিস ভাংচুরতো দুরের কথা আমি অফিসই চিনিনা কিন্তু আমাকে মামলায় আসামী করা হয়েছে। এ হয়রানীমুলক মামলা থেকে দ্রুত অব্যহতির দাবী জানান তিনি।
আঠারোগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্য্যান রফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, আমি ঘটনার তিন দিন আগে থেকে পটুয়াখালী বাসয় ছিলাম। কিন্তু আমাকে অহেতুক মামলায় জড়ানো হয়েছে। দ্রুত এ মামলা থেকে আমাকে অব্যহতি দেয়ার দাবী জানাই।
কুকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ বোরহান উদ্দিন মাসুম মাসুম তালুকদার বলেন, বিএনপি অফিস ভাংচুরের সঙ্গে আমি জড়িত নয় কিন্তু আমাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় মামলায় আসামী করা হয়েছে। এ হয়রানীমুলক মামলা থেকে আমাকে দ্রুত অব্যহতি দেয়ার দাবী জানান তিনি।
দুইটি মামলার বাদী উপজেলা ছাত্রদল আহবায়ক সোয়েব ইসলাম হেলাল ও পৌর যুবদল সভাপতি জাকির হাওলাদার বলেন, বিএনপি অফিস ভাংচুরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জিএম ওসমানী হাসানের নেতৃত্বে সাড়ে চার শতাধিক আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও শ্রমিকলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপি’র দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করেছে এবং অফিসের মালামাল তছনছ করেছে। এ ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জিএম ওসমানী হাসান বলেন, একই ঘটনায় দুইটি আলাদা মামলা হয়েছে। এতেই প্রমাণ হয় মামলা মিথ্যা। তিনি আরো বলেন, নেতাকর্মীদের অহেতুক হয়রানী করতেই এ মামলা দেয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, হয়রানী করতেই আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। ওই অফিস আমরা ভাংচুর করিনি। উল্টো বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামীলীগ অফিস দখল করে নিয়েছে।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, একই ঘটনায় দুইটি মামলায় ৯৩ জন আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং ৩৫০ জন অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। আসামী গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যহত আছে।