রিমন রাজভর: আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিতকরণ, ভূমি-ভাষা-সংস্কৃতি-কৃষ্টি ও ঐতিহ্য রক্ষায় রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ, সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠন, উচ্ছেদকৃত আদিবাসীদের পুনর্বাসিত করার দাবিতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ ইক্ষুখামার এলাকায় বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১১ টায় পতাকা উত্তোলন, উদ্বোধন ঘোষণা, অস্থায়ী শহীদবেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এবং আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের সারা দেশ থেকে আগত নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেবেকা সরেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহ-সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের উপদেষ্টা মহসিন রেজা, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, ডঃ ফর হেলথ এন্ড এনভারমেন্ট এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার শাকিল আখতার, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের উপদেষ্টা আলতাফ হোসেন, ডাক্তার দেবালোক সিংহ প্রমূখ।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ২০১৬ সালে পুলিশের গুলিতে নিহত শ্যামল হেমব্রম এর সন্তান সাগর হেমব্রম। জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধনের পর অস্থায়ী শহীদবেদীতে ২০১৬ সালে পুলিশের গুলিতে নিহত তিন সাঁওতাল স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দসহ সিপিবি, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন ও অন্যান্য গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এরপর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। উদ্বোধনী অধিবেশনের শুরুতেই শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন আদিবাসী নেত্রী রাখি জং।
বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন প্রণীত ১৫ দফার ভিত্তিতে দাবি আদায়ের সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আইএলও কনভেনশন এর ১৬০ ও ১০০৯ অনুচ্ছেদ অনুমোদন ও বাস্তবায়ন জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্র ২০০৫ অনুসাক্ষর ও বাস্তবায়ন করতে হবে। বগুড়া জেলার শেরপুরের ভবানীপুর ইউনিয়নে আদিবাসী পল্লীতে হামলাকারী ভূমিদস্যদের গ্রেফতার, স্থানীয় আদিবাসীদের নিরাপত্তা ও ভূমির অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং নেত্রকোনার সত্যবান হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। তারা বলেন, পূর্ব পুরুষের ভূমি তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি অবিলম্বে বাস্তবায়ন, চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য এলাকা থেকে সেনাবাহিনীর প্রত্যাহার এবং সেখানে সব ধরনের দমনপীড়ণ বন্ধ করা, ১০০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি, ভিজিএফ, কাবিখাতে দরিদ্র আদিবাসীদের অন্তর্ভূক্তি সহ তাদের জন্য স্থায়ী রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি তাঁরা জানান।