আবু সাঈদ: গাজীপুরের তিন মাসের শিশু মা ফাতেমাকে অপহরনের ছয় দিন পর উদ্ধার এবং অপহরনে জড়িতদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (০৭ এপ্রিল) শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ পশ্চিম পাড়া গ্রামের সুবেদ আলীর ভাড়া বাসা থেকে অপহৃত শিশু উদ্ধার ও গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (০৮ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী শফিকুল আলম তাঁর কার্যালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাউশি গ্রামের আব্দুল গনির মেয়ে আল্পনা ওরফে রুবিনা (২৫), তার সহযোগী একই জেলার দুর্গাপুর উপজেলার হাবিআলী গ্রামের আবুল কাশেমের স্ত্রী ফাতেমা (৩৫) এবং তাদের ছেলে রফিকুল ইসলামকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়।
অপহৃত শিশু মা ফাতেমা ঝিনাইদহ জলোর মহেশপুর উপজেলার বিশ্বনাথপুর গ্রামের ফিরোজ হোসেনের কণ্যা। সে তার স্ত্রী, শিশু মেয়ে ও শ্বাশুড়ীকে নিয়ে জেলার জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা এলাকার মাজহারুল ইসলামের বাড়িতে দুই মাস যাবত ভাড়া থাকে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তাজয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মমিন জানান, ফিরোজ হোসেন দুই মাস পূর্বে তার শিশু মেয়েসহ স্ত্রী ও শ্বাশুড়ীকে নিয়ে জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা এলাকার মাজহারুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়ায় উঠে। সে রাজ মিস্ত্রি এবং তার স্ত্রী স্থানীয় পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। প্রতিদিন শিশু কণ্যাকে তার দাদির কাছে রেখে দম্পুত কর্মস্থলে চলে যায়। গত দেড় মাস পূর্বে (২০ মার্চ) আসামী আল্পনা ওরফে রুবিনা ওই দম্পতির পাশের ঘর ভাড়া নেয়। পরে সে বিভিন্ন কৌশলে শিশুর পরিবারের সদস্যদের সাথে মিশে সখ্যতা ও বিশ্বাস অর্জন করে।
গত রবিবার (০২ এপ্রিল) শিশু মা ফাতেমাকে তার দাদীর কাছে রেখে বাবা-মা তাদের কর্মস্থলে চলে যায়। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০ টায় শিশু কান্না শুরে করে। পরে আসামী আল্পনা ওরফে রুবিনা শিশুকে কোলে নিয়ে তার দাদিকে রান্না ঘর থেকে দুধ গরম করে আনতে বলে। এ সুযোগে আসামী আল্পনা ওরফে রুবিনা কৌশলে শিশুকে তার নিজের রুমে নিয়ে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে ঘরের পেছনের জানালা দিয়ে (গ্রীল ছাড়া) লাফ দিয়ে শিশুকে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শিশুর বাবা মামলা দায়ের করলে সিসি টিভি ফুটেজ, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুরের পূর্বের শিশু চক্রের সদস্যদে সাথে ছবি (মুখ শনাক্তকরণ সফটওয়ারের) মাধ্যমে চিহ্নিত করে এবং পুলিশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী স্বীকার করে সে নিজে লালন পালন করার জন্য শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। লালন পালন করতে না পারলে পরবর্তীতে সে শিশুকে বিক্রি করে দিতো বলে জানায়। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে এবং শিশুকে তার বাবা-মা’র কাছে ফিরিয়ে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন, সদর সার্কেলেরসহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিরাজুল ইসলাম, জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মমিন।